|| মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, কুমিল্লা থেকে ||
বায়তুল আজগর সাত গুম্বুজ মসজিদ নন্দিত স্থাপত্যকাঠামোয় ঋদ্ধ। যা পলকেই জায়গা করে নেয় মানুষের হৃদয়ন্তে। মসজিদটিতে কারুকাজ করা হয়েছে মোগল, তুর্কি ও পারস্য স্থাপত্যকলার সংমিশ্রণে। এটি নির্মাণের সময় ইট, বালু, সিমেন্ট এর পাশাপাশি চিনামাটি ও টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে।
জেলার দেবিদ্বার উপজেলা সদর থেখে দুই কিলোমিটার পশ্চিমে গুণাইঘর গ্রামে নান্দনিক এই মসজিদটির অবস্থান। যেখানে শুধু নামাজ পড়তেই নয়, এক নজর দেখতেই আসেন ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ।
মসিজদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০২ সালে। ২০০৫ সালে এটি খুলে দেয়া হয় নামাজীদের জন্য। সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মন্জুরুল আহসান মুন্সী মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির স্থপতি শিল্পী শাহিন মালিক। ক্যালিগ্রাফি, কারুকাজ ও নকশার শিল্পী বশির মেসবাহ।
মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪৮ ফুট, প্রস্থ ৩৬ ফুট। সাতটি গুম্বুজ, চারটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ৮০ ফুট। ভেতরে রয়েছে ঝাড়বাতি। মসজিদটির ভিতরে দেড়শতাধিক মুসুল্লি নামাজ পড়তে পারেন। বারান্দায় নামাজ পড়তে পারেন দুইশতাধিক মুসুল্লি। মসজিদের সামনে আরো পাঁচ শতাধিক মুসল্লির নামাজ পড়ার জায়গা করা হয়েছে। মসজিদের উপর বিভিন্ন আলোক সজ্জা রয়েছে। যা দূর থেকে নজর কাড়ে। মসজিদে লেখা আল্লাহ শব্দটি রাতের বেলা জ্বলতে থাকে। মসজিদটির সাথে ফুলের বাগান রয়েছে। ভিতরে ও বাইরে অসংখ্য চাঁদ ও তাঁরা আঁকা রয়েছে। এখানে বাংলাতে আটটি ক্যালিওগ্রাফি রয়েছে। আরবিতে লেখা রয়েছে কোরআনের চার কুল। মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে ৩ শত ৫০ মন চিনামাটির টুকরো ও ২ শত ৫০ টি গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে।
মসজিদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শেষ বিকালের আলো নান্দনিক মসজিদটির পশ্চিম দক্ষিণ পাশে ছড়িয়ে আছে। সূর্যের আলো পড়ে শুভ্র রঙের মসজিদ ঝলমল করছে।
সাইদুর রহমান বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন পাশের কুমিল্লা হাউজিং এলাকা থেকে। তারা ঘুরে ঘুরে মসজিদ দেখছেন। তিনি বলেন, গ্রামে এত সুন্দর মসজিদ নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।
মসজিদের খতিব মাওলানা গাজী ইয়াকুব ওসমানী বলেন, বায়তুল আজগর সাত গুম্বুজ মসজিদটি নির্মাণ শৈলীর দিক থেকে সারা দেশের মধ্যে অন্যতম। মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে। বিশেষ করে দূর দূরান্ত থেকে অনেক মুসল্লি শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে আসেন।