|| এস এম শাহাদৎ হোসাইন, গাইবান্ধা থেকে ||
জলজ ফুলের রাণী বলা হয় পদ্মকে। আর তা যদি হয় লাল পদ্ম। তাহলে তো কথা নেই। এ বর্ষা মৌসুমে গাইবান্ধার বিল-ঝিলগুলোতে পদ্ম মেলে ধরেছে নিজেদের সৌন্দর্যের ঝাঁপি।
বিলের স্বচ্ছ জলে ফুটে থাকা পদ্মের দিকে ঠাঁয় তাকিয়ে থাকলে যে কোন মানুষের চোখ জুড়িয়ে আসে প্রশান্তি। আর পদ্ম ফুলের এই সাম্রাজ্যে কোন বাধাই যেন হার মানেনা
দাপুটে শৈশব যেনো সদর উপজেলার কামারপাড়ার কাতলার বিলে জলের ওপর বিছানো থালার মতো গোলাকার সবুজ পাতা। ফাঁকে ফাঁকে লম্বা ডগার উপর লাল সাদা পদ্ম ফুল। অসংখ্য পাপড়ির চমৎকার বিন্যাসে সজ্জিত একেকটি পদ্ম যেমন সুগন্ধ ছড়ায়, তেমনি যে কোন মানুষের হৃদয় কাড়ে খুব সহজেই। তাই হয়তো পদ্ম কাঁটার যন্ত্রণাও এর স্পর্শ থেকে আটকে রাখতে পারে না শৈশবকে।
কামারপাড়া গ্রামের শ্রাবন নামে এক শিশু নৌকা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিলের দিকে। সেই নৌকার যাত্রী আরেক কিশোরী সিদরাতুল মুনতাহা নূহা। একহাতে হাতে তোলা পদ্মগুলোকে নৌকায় বসে মেলে ধরেছে অন্য হাতে।
পদ্ম ফুলের গোলাকার পাতাটি মাথায় ছাতা হিসেবে ব্যবহার করেছে নূহা। সিদরাতুল মুনতাহা নূহা বললো, পদ্ম ফুল তুলতে গিয়ে কাটার খোঁচা লেগেছে। কিন্তু ফুল তোলার পর সব কষ্ট দুর হয়ে গেছে।
পদ্ম ফুলের সাম্রাজ্যে একাই থাকে না তারা। সাথে আছে শাপলা, শালুকসহ বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদের বসবাস। জলাভূমিতে ফুটে থাকা পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য যতোটা না কাছে টানে। তার চেয়েও শিশুরা বেশী আগ্রহী পদ্ম খোঁচার প্রতি।
বৈশাখ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত কামারপাড়ার কাতলার বিল, বাদিয়াখালীর রিফাইতপুর, সাঘাটা উপজেলার যাদুর তাইড় গ্রামে দেখা মেলে লাল ও সাদা পদ্মের। পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য্য আর অপরূপ শোভা দুর-দুরান্ত থেকে ফুলপ্রেমীদের টেনে আনে পদ্ম ফুলের গ্রামগুলোতে।
বিলগুলোতে লাল ও সাদা পদ্ম চোখে পড়লেও নীল পদ্ম দেখা যায় না। উদ্ভিদবিদদের মতে, বেশিরভাগ খাল, বিল জলাশয়ে পানি না থাকায় দিনদিন অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ছে পদ্মের মতো অনেক জলজ উদ্ভিদ।