করোনা সুরক্ষায় বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীলের ঘরোয়া চিকিৎসা

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

করোনা ভাইরাস সংক্রমণে সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে আতঙ্কিত না হয়ে হাতের নাগালেই পাওয়া যায় এমন কিছু পথ-পদ্ধতি ও ওষুধ বাতলে দিলেন বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে কয়েকটি সহজ পদ্ধতি অনুসরণের কথা জানিয়েছেন ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, করোনাকে শুরুতেই নির্মূল করাই সব থেকে ভালো। এজন্য তিনি দু’টি উপায়ের কথা বলেছেন।

যার একটি হচ্ছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত না হতে চাইলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বিধি বিধান মেনে চলতে হবে। ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার পেয়ারা, লেবু, আমলকি অথবা ভিটামিন ‘সি’ ট্যাবলেট খেতে হবে। এর সঙ্গে সম্ভব হলে প্রতিদিন রাতে একটি জিঙ্ক ট্যাবলেট খাবেন। এগুলো করোনা বিরুদ্ধে প্রতিরোধে খুব ভালো কাজ করে। এছাড়া ভিটামিন ‘সি’ এবং জিংক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সতেজ, সজীব রাখে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

আরেকটি হচ্ছে, কেউ যদি আক্রান্ত হন, যেমন গলাব্যথা, শুকনো কাশি, কাশি হবে কিন্তু কফ বের হবে না। এটা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম লক্ষণ। অন্য ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্তদের হাঁচি, সর্দি ও নাক দিয়ে পানি পড়ে। তবে করোনা ভাইরাস শুকনো কাশি দিয়ে শুরু হয়। এ ধরণের উপসর্গ দেখা দিলে বেশি হালকা রং চা বারবার খেতে হবে। কুলকুচি করতে হবে গরম পানি দিয়ে। আদা, লবঙ্গ ও একটা গোলমরিচ পানিতে মিশিয়ে গরম করলে কালোমতো একটা রং হবে। যার সঙ্গে সামান্য মধু বা চিনি দিয়ে চায়ের সঙ্গে খেলে অথবা এই পানি দিয়ে কুলকুচি করতে হবে।

তিনি বলেন, এসব মেনে চললে গলায় যে ভাইরাসগুলো থাকে সেগুলো মারা যায়। এছাড়াও গলায় গরম লাগার ফলে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। রং চায়ের মধ্যে যে এন্টিসেপ্টিক গুনাগুণও রয়েছে তা শুকনো কাশির কারনে চিড়ে যাওয়া গলার টিস্যু মেরামতে দারুন কাজ করে।

সকাল দুপুর ও রাতে গরম পানিতে কুলকুচি করা


এছাড়া জ্বর হোক বা না হোক এই মুহূর্তে সবার উচিত সকালে ঘুম থেকে উঠে, দুপুরে এবং সন্ধ্যায় গরম পানিতে কুলকুচি করা। এটা করলে শরীরে ভাইরাস ঢুকলেও সেটা আর বাড়তে পারবে না। এটা শুধু করোনা ভাইরাস না আরও অনেক ইনফেকশনকে রোধ করতে পারে। কেউ যদি এটা প্রতিদিন করতে পারে, তাহলে তার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

নিমপাতার রসে হলুদগুঁড়া


করোনা ভাইরাসের কারণে যদি কখনও কারও পেটের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে নিমপাতা বেটে সবুজ রসের সঙ্গে এক চামচ হলুদের গুঁড়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকালে এবং রাতে খেলে তার পেটের ইনফেকশন কমে যাবে, সে অনেক ভালো থাকবে। এ সময় এমন রোগীকে এন্টিবায়োটিক খাওয়ালে অনেক সমস্যা হয়।

বাইরে কাজ করিয়েদের জন্য পরামর্শ


করোনা ভাইরাস শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই আক্রমণ করে না। সময় নিয়ে শরীরের মধ্যে বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে বাইরে থেকে বাসায় ফিরে গরম পানি পান করা, এক কাপ হালকা রং চা খাওয়া, নাক ও মুখ দিয়ে গরম পানির বাস্প নেওয়া, পানির মধ্যে এক ফোঁটা মেনথল দিলে আরও ভালো হয়। তাহলে নাকটা আরও ভালোমতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। ভাইরাস ঢুকলেও শরীরের মধ্যে বাড়তে ও সুবিধা করতে পারবে না।

সার্স প্রজাতির ভাইরাসের কুইক টেস্ট পদ্ধতির আবিস্কারক অণুজীববিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের র‌্যাপিড ডট ব্লট কিট উদ্ভাবন দলের প্রধান বিজ্ঞানী। ১৯৯৯ সালে ছাগলের মড়ক ঠেকানোর জন্য পিপিআর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেন তিনি। ২০০২ সালে ডেঙ্গুর কুইক টেস্ট পদ্ধতির আবিষ্কারকও ড. বিজন। যা সিঙ্গাপুরে তার নামেই পেটেন্ট করা। ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের কুইক টেস্ট পদ্ধতিও উদ্ভাবন করেন তিনি। যেটিও তার নামে পেটেন্ট করা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সার্স ভাইরাস প্রতিরোধে সিঙ্গাপুর সরকারের একজন বিজ্ঞানী হিসেবে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন ড. বিজন কুমার শীল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন