করোনায় কী খাবেন, কী খাবেন না

যাপিতজীবন ডেস্ক
এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে মানুষকে সবথেকে বড় বিপর্যয়ে ফেলেছে প্রাণঘাতি ভাইরাস কভিড-১৯। করোনা নামে সাধারণে পরিচিত এই ভাইরাসে এখন সারাবিশ্বে চলছে মৃত্যুর মিছিল। প্রতিদিনই সংক্রমিত হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। মারাও যাচ্ছেন বহু মানুষ। বিশেষ করে এতে বৃদ্ধ ও শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছেন বেশী হারে।
এই পরিস্থিতিতে কী করবেন আর করবেন না এ নিয়েও রয়েছে দু:শ্চিন্তা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে নিজে ও স্বজনদের কিভাবে সচেতন করা যায়, তার চেষ্টা করতে হবে। আমি, আপনি কেউই কিন্তু এই ভাইরাস থেকে নিরাপদ নই। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী ছড়ানো এই ভাইরাসের প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।
কিন্তু কিছু বেসিক বিষয় আছে, সেগুলো মেনে চললে এই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তার মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো খাদ্যাভ্যাস। কারণ এর মাধ্যমেই আমরা সঠিক রোগপ্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়াতে পারি।
কারণ যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম বা ডায়বেটিক, হৃদরোগ, অ্যাজমার মত রোগে ভুগছেন তাদের কিন্তু এই ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাছাড়া আমরা যেহেতু স্বল্পআয়ের দেশে বাস করছি, তাই আমাদের হাতের কাছে অর্থাৎ ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে যা আছে তা দিয়ে প্রতিদিনের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারি।
যেসব খাবার সংক্রমণ প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়ায়: দুধ বা দুধজাতীয় খাবার। যেমন-টকদই ও ছানা। খাদ্যশস্য (যেমন- লাল চাল, লাল আটা, মিষ্টি আলু), মাছ, মুরগি ও ডিম। প্রচুর রঙিন শাকসবজি। এছাড়া ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল বা টক জাতীয় ফল। যেমন-লেবু, কমলা, আমলকী, মালটা, পেয়ারা, আনারস, বেদানা ইত্যাদি।
মৌসুমি সবজি, মাশরুম এবং আদাসহ চিকেন ক্লিয়ার স্যুপ, আদা, ব্ল্যাক ও জিঞ্জার-টি। আমাদের প্রতিদিনের ডায়েটে এন্টি-ভাইরাল খাবারগেুলো অন্তর্ভুক্ত করা খুবই জরুরি।
রসুনের রয়েছে অ্যালাইসিন নামক প্রাকৃতিক উপাদান। যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। একটি কাঁচা রসুন চিবিয়ে অথবা স্যুপের সঙ্গে যোগ করে খেতে পারেন।
আরও একটি প্রক্রিয়ায় আমরা গ্রহণ করতে পারি: ১ টেবিল চামচ রসুনকুচি, ১ টেবিল চামচ মধু ও ১টা লবঙ্গ একসঙ্গে খেতে পারি। এটি দারুণভাবে ইমিউন সুরক্ষায় কাজ করে। এছাড়া আদা, মধু ও মাশরুম খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
রান্নার জন্য সয়াবিন বা সরিষা তেলের পরিবর্ততে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারি। নারিকেল তেলে লরিক অ্যাসিড ও কাপ্রিলিক অ্যাসিড করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ভেষজ যেমন- তুলসী, থানকুনি, অরিগানো, মেথি-রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে সহায়ক।
যেসব খাবার আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে: ঘরে বসে বাইরের অর্ডার করা খাবার একদম বাদ দিতে হবে। খাওয়া যাবে না অতিরিক্ত মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া ও বাইরের হোটেল বা রাস্তার খাবার। ধূম ও মদপান করা যাবে না।
খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে। প্রতিদিনের খাবারে যদি আমরা ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারগুলো (ওপরে উল্লেখিত) রাখি তবেই আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারবো।
তাই অসুস্থ হওয়ার আগে প্রতিরোধ খুবই জরুরি। আর এই প্রতিরোধের এজন্য অনাক্রম্যতা (টিকা) সুরক্ষা বুস্ট-আপ করাটাও খুবই জরুরি।
পরামর্শ দিয়েছেন স্কয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তপতী সাহা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন