আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে কাপাসিয়ার ‘জামাল আহমেদ পাঠাগার’

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই, গবেষণামূলক বই, বিজ্ঞানধর্মী, সায়েন্স ফিকশন, চিকিৎসা বিষয়ক বই, বিভিন্ন গুনীজনদের আত্মজীবনীমূলক বই, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, কিশোর গল্প, ধর্মীয় পুস্তক, চিরায়ত সাহিত্য ও ভারতীয় বাংলা বই এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লেখকের ইংরেজী ভার্সন বইসহ নানা ধরণের বই।

|| আবুল হোসেন সবুজ, গাজীপুর থেকে ||

“পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই” এই শ্লোগান বাস্তবায়নের প্রত্যয় নিয়ে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের খিরাটী বাজারের পাশেই ‘জামাল আহমেদ পাঠাগার’। খিরাটী গ্রামের কৃতি সন্তান ও দ্য রয়েল পাবলিসার্স’এর স্বত্বাধীকারী জামাল উদ্দিন আহমেদ মানুষের মাঝে পড়াশুনার অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন এই পাঠাগার’। পাঠাগারটি এখন বই আর পড়ুয়াদের ভীড়ে সরগরম।

জামাল আহমেদ বেসরকারী একটি ইউনির্ভাসিটি থেকে ব্যবসা ব্যবস্থাপনায় এমবিএ করার পর পেশা হিসেবে বেছে নেন প্রকাশনা ব্যবসাকে। গড়ে তোলেন প্রকাশনা সংস্থা দ্য রয়েল পাবলিসার্স। ছোট বেলা থেকেই তার ঝোঁক ছিলো বই পড়ায়। বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকেই পথের ধারে তিনি গড়ে তোলেন এই পাঠাগার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামাল উদ্দিন আহমদ বলেন, অনেক মানুষ আছেন যারা অবসর সময়ে বই পড়তে ভালোবাসেন। কিন্তু নিয়মিত বই কিনে পড়ার সামর্থ নেই। আবার সামর্থ থাকলেও পাঠাগারে যাওয়া, পাঠাগারের সদস্য হওয়া, নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার ঝামেলায় সেটি আর হয়ে ওঠে না। তাই ঝামেলা এড়িয়ে খুব সহজে ও বিনা মূল্যে তাদের বই পড়ার সুযোগ দিতেই এই পাঠাগার। ২০২০ সালের ১৯শে নভেম্বর এই পাঠাগারটি সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে দেশের গন্যমাণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে বড় পরিসরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করার ইচ্ছে রয়েছে জামাল আহমেদের।

তিনি আরো বলেন, পাঠাগারটিতে শুরুতে ১২৮০টি শিরোনামের ২৫০০ কপি বই রাখা হয়।  যার মধ্যে তার নিজের প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত বই ১৫শ’। আর বাকি এক হাজার দেশের বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে সহায়তা হিসেবে পাওয়া। সবমিলিয়ে এখন বইয়ের সংখ্যা ৩ হাজারেরও বেশী।

জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, গাজীপুর-৪ কাপাসিয়া আসনের সাংসদ সিমিন হোসেন রিমি এমপি এই পাঠাগারে বেশ কিছু সংখ্যক বই দিতে চেয়েছেন। এছাড়াও প্রখ্যাত উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ও প্রকাশক ড. মোহাম্মদ আবুল হাসান তাঁর নিজের লেখা বই থেকে শুরু করে প্রায় ২০টিরও বেশি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান হিসেবে জোগাড় করে দিয়েছেন।  

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

‘জামাল আহমেদ পাঠাগার’ এ রয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই, গবেষণামূলক বই, বিজ্ঞানধর্মী, সায়েন্স ফিকশন, চিকিৎসা বিষয়ক বই, বিভিন্ন গুনীজনদের আত্মজীবনীমূলক বই, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, কিশোর গল্প, ধর্মীয় পুস্তক, চিরায়ত সাহিত্য ও ভারতীয় বাংলা বই এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লেখকের ইংরেজী ভার্সন বইসহ নানা ধরণের বই।

জামাল আহমেদ জানান, এরইমধ্যে পাঠাগারটির রাষ্ট্রীয় অনুমোদনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

এ প্রচেষ্টার প্রশংসা করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহীনুর আলম সেলিম বলেন, এটা আমাদের জন্য একটি ভালো কাজ হয়েছে। এলাকার যুব সমাজ থেকে শুরু করে সবাই এখান থেকে বই এনে পড়ে উপকৃত হবে। আর মরণব্যাধী নেশার ছোবল থেকে তারা পাঠ্যাভ্যাসের মাধ্যমে আস্তে আস্তে আলোর পথে চলতে শুরু করবে।

সংবাদ সারাদিন