|| গোবিন্দ শীল ||
আমাদের শরীরের প্রায় ২ লাখ স্নায়ু, ২৬টি হাড়, ৩৩টি জোড়া (জয়েন্টস্), ১০০টি নানা প্রকার পেশী, লিগামেন্ট, রক্তবাহী নালী এবং প্রায় আড়াই লাখ ঘর্ম গ্রন্থি দুই পায়ের তালুতে ও তার আশে পাশে রয়েছে । আমাদের পূর্ব পুরুষেরা খালি পায়ে হাঁটা-চলা করতেন। তাতে তাঁদের পায়ের পেশী, শরীরের ভারসাম্য, হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভাল থাকতো, সেই সাথে উন্নত রক্ত সঞ্চালন ও অঙ্গবিন্যাস ভারসাম্যময় হতো। দীর্ঘ সময় জুতা পরে থাকি বলে আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক অনেক কর্মকান্ডই ঠিকমত হয় না।
পৃথিবীর উপরিভাগ নেগেটিভ চার্জযুক্ত আর মেটাবলিজমের কারণে আমাদের শরীরে নানা ফ্রি র্যাডিক্যালস্ তৈরী হয় যেগুলো পজিটিভ-চার্জ সম্পন্ন। খালি পায়ে হাঁটলে ফ্রি র্যাডিক্যালসগুলো চার্জহীন (নিউট্রোলাইজ) হয়। এতে করে নানাবিধ ইনফ্লেমেশন থেকে শরীর রক্ষা পায়। এই ইনফ্লেমেশন অনেক সময় ক্যান্সার ও পেটের নানা পীড়া সৃষ্টি করে।
যেহেতু পায়ের পাতা ও তার চারপাশে লাখ লাখ স্নায়ু থাকে, তাই খালি পায়ে হেঁটে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা যায় । এতে ঘুম ভাল হয়, আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো ঠিকভাবে কাজ করে। চোখের ডাক্তাররা খালি পায়ে ঘাসের ওপর হাঁটতে বলেন, এতে করে চোখের জ্যোতি ঠিক থাকে। শরীরের সাথে মাটির আয়ন বিনিময় হবার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত হয় এবং আমাদের মস্তিষ্ক আরো ভালভাবে কাজ করতে পারে।
দশকের পর দশক আমরা জুতো পরে অফিস করছি, হাঁটা-হাঁটি করছি এতে করে আমাদের শরীরের অঙ্গ-বিন্যাস ও ভারসাম্যে তৈরি করছে অসাম্য। আমাদের শরীর প্রকৃতির তৈরী একটি যন্ত্রবিশেষ, ফলে খালি পায়ে হাঁটলে এটির স্বাভাবিক বিকাশ ও সুরক্ষা হয়। প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট খালি পায়ে হাঁটুন (লজ্জা পাবেন না) এবং শরীরকে সুস্থ রাখুন।
লেখক : সাংবাদিক