বোরোর বীজতলা তৈরিতে আনোয়ারার মাঠে ব্যস্ত কৃষক

আমন ধান ঘরে তুলতে না তুলতেই  চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার কৃষকরা কোমরে গামছা বেঁধে আর হাতে কোদাল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বোরোর বীজতলা তৈরিতে।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) ||

কৃষকের ভোর শুরু হয় ঘাম ঝরানো ব্যস্ততা দিয়ে। জমি তৈরি, বীজতলা তৈরি আর সেচ এসব শ্রমে ঝরে কৃষকের লোনা ঘাম। এমনি ঘামের দামে কৃষকের ক্ষেতে উপচে পড়ে ফসলের হাসি। সে ফসল দেশের কোটি মানুষের অন্ন জোগায়। বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করার এখনই সময়। তাই আমন ধান ঘরে তুলতে না তুলতেই  চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার কৃষকরা কোমরে গামছা বেঁধে আর হাতে কোদাল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বোরোর বীজতলা তৈরিতে।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

কেউ ট্রাকটর কিংবা পাওয়ার টিলার দিয়ে আর কেউবা মই-কোদাল নিয়ে মাটি কুপিয়ে তৈরি করছেন বোরো ধানের বীজতলা । বীজতলার জমি তৈরি, পানি সেচ, আর ধানের বীজ প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বোরো ধানের চারা উৎপাদনের জন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা।

মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা ভূমির আইল বাধা, আগাছা পরিষ্কার করা, কোদাল দিয়ে জমির উঁচু-নিচু জায়গাগুলো সমান করা, শুকনো জমিতে সেচ দেয়ার কাজেই দিন পার করছেন। বোরোর বীজতলায় ব্যবহৃত বীজের শতকরা ৮৫ ভাগ কৃষকের নিজ গৃহেই সংরক্ষিত। বাকি ১৫ ভাগ বীজ কৃষি অধিদফতর থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে কৃষকদেরকে।

উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এই বছর বোরোর বীজতলা নির্মানের আনুমানিক লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮০ হেক্টর জমি যা গত বছরের চেয়ে ৩০ হেক্টর বেশি। এসব জমিতে দেওয়া বীজের পরিমাণ প্রায় ২২ টন। যার মধ্যে কৃষি অধিদফতর থেকে দেয়া হচ্ছে ৫ থেকে ৭ টন। যার বেশির ভাগ হচ্ছে হাইব্রিড ধানের বীজ।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

উপজেলার ৪ নম্বর বরুমছড়া ইউনিয়নের কৃষক মোহাম্মদ আনজু মিয়া বলেন, আলহামদুলিল্লাহ! এইবার আমনের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। যদি বেশী কুয়াশা না ধরে তাহলে বীজের চারাও অনেক ভালো হবে।

১০ নম্বর হাইলধর ইউনিয়নের কৃষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, আমরা ছোট থেকেই নিজ জমিতে চাষাবাদ করে আসতেছি। আলহামদুলিল্লাহ! আগের চেয়ে অনেক গুণ বেশি ফসল ঘরে তুলতে পারতেছি। কৃষি অধিদফতরের দেওয়া বীজ পেয়ে এইবার অন্যান্য বারের তুলনাই চাষ ২ কানি বেশী করবো।

এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, করোনাসময়ে সর্বস্তরের মানুষের খাদ্য চাহিদা নিশ্চিত করতে বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই সাথে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জমিতে বেশি ফলনশীল ধান এবং চাষাবাদ বাড়ানোর। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দরকারি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে আনোয়ারা উপজেলায়।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

ধানের উৎপাদন বাড়াতে এই প্রথমবারের মত ৫ হাজার কৃষকদের দেয়া হয়েছে অধিক ফলনশীল হাইব্রিড ধানের বীজ। যা দিয়ে চাষাবাদ করা যাবে ২ হাজার হেক্টর জমি। তিনি আরো বলেন, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় স্লুইচগেইট নির্মান হওয়ার কারণে অনেক অনুর্ভর জমি কৃষির আওতায় এসেছে। এবারে বোরো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫৫৬০ হেক্টরেও বেশী জমিতে।

 

সংবাদ সারাদিন