জামালগঞ্জে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো ক্ষতিটা কৃষকেরই

করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কোম্পানীগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে চাষীদের। অনেকের জমিতেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে টমেটো। পরিবহন খরচ না ওঠায় পাইকারিবাজারেও টমেটো নিচ্ছেন না কৃষকরা।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) ||

জামালগঞ্জের মন্নানঘাট পাইকারি বাজারে ৪০ টাকা মণ দরে বিক্রি হওয়া টমেটো শহরে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি। টমেটো সস প্রস্তুতকারক কোম্পানীতে সরবরাহের আশা এবং বন্যার ক্ষতি পোষাতে জামালগঞ্জে ব্যাপক হারে চাষ করা হয়েছিল টমেটো। করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কোম্পানীগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে চাষীদের। অনেকের জমিতেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে টমেটো। পরিবহন খরচ না ওঠায় পাইকারিবাজারেও টমেটো নিচ্ছেন না কৃষকরা।

জামালগঞ্জ উপজেলা কাশিপুর গ্রামের ইয়ার আলী জানান, ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন গ্রীষ্মকালীন টমেটো। ফাল্গুন মাসের প্রথম দিকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করতে পেরেছেন। কিন্তু ওই টাকায় তার উৎপাদন খরচ ওঠেনি। গত বছর ২ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ প্রায় লাখ টাকা আয় করেছিলেন। এবার একই জমিতে টমেটো চাষ করে তা বিক্রি করতে না পারায় পড়েছেন বিপাকে। প্রতি বিঘায় ২০০ মণ থেকে ২৫০ মণ টমেটোর ফলন হয়। পাইকারি বাজারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন সস কোম্পানীতে এই এলাকার টমেটো সরবরাহ করা হতো। কিন্তু এ বছর কোম্পানীগুলো টমেটো না নেওয়ার কারণে জমিতেই তা পচে নষ্ট হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পরিবহন সঙ্কটের কারণে দেশের অন্য স্থানে টমেটো সরবরাহ করা যাচ্ছে না। টমেটো জমি থেকে উঠিয়ে পাইকারি বাজার মান্নানঘাটে নিয়ে যেতে কেজি প্রতি ১ টাকা খরচ হয়। সেই টমেটো বাজারে বিক্রি করতে হয় ৪০০ টাকা মণ।

কৃষক ইয়ার আলীর মতো একই অবস্থা রামপুর, কাশিপুর, শরীফপুর, চাঁনপুর, সংবাদপুর গ্রামের টমেটো চাষীদের। তবে তারা টমেটো বিক্রি করে দাম না পেলেও হাত বদল করে সেই টমেটো শহরে বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিতে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আড়তে কম দামে কিনলেও টোল পরিবহন খরচ দিয়ে তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া এক সাথে অনেক টমেটো উৎপাদন হওয়ায় চাহিদা কমে যাওয়ায় হঠাৎ করে টমেটোর দাম নেমে গেছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, অন্য বছরের তুলনায় এবার টমেটো অনেক বেশি চাষ করা হয়েছে। এবং দেশের অন্য স্থানেও লাভ বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই টমেটোর চাষ করেছেন। চলমান সঙ্কটে এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

সংবাদ সারাদিন