কৃষিজমি ও জীবিকা রক্ষার দাবীতে সোচ্চারণ বাগেরহাটে

কৃষকদের না জানিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার কাজ শুরু করলে কৃষকরা তাতে বাধা দিয়েছে। সে কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গ্রামবাসী ও কৃষকদের ভয়-ভীতি এবং হুমকি-ধামকিও দেয়া হচ্ছে।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট ||

জেলার পশুর নদী ড্রেজিংয়ের বালু ফেলে কৃষিজমি ভরটা না করে কৃষকদের জীবিকা রক্ষার দাবীতে এবং ড্রেজিং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগিরা। বুধবার ৫ই মে বাগেরহাট প্রেসক্লাব রোডে মানববন্ধন এবং প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের সোচ্চরণ ও দুর্দশার কথা তুলে ধরেন মংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের সাত গ্রামের জমির মালিকরা।

মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশ এবং সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় কৃষকরা দীর্ঘদিন থেকে বংশ পরম্পরায় সুন্দুরতলা, তেলিখালী, আমতলা, গাববুনিয়া, কলাতলা, কেয়াবুনিয়া ও চিলা গ্রামের অন্তর্গত পশুর নদীর পাড়ের জমিতে কৃষি ও মাছ চাষ করে জীবন চালিয়ে আসছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ পশুর নদী ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় নদী ড্রেজিং করে সেই বালু তাদের কৃষিজমিতে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইতোমধ্যে, কৃষকদের না জানিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার কাজ শুরু করলে কৃষকরা তাতে বাধা দিয়েছে। সে কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গ্রামবাসী ও কৃষকদের ভয়-ভীতি এবং হুমকি-ধামকিও দেয়া হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের ৭০০ একর কৃষিজমিতে এই বালু ফেলার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কৃষিজমির মালিকদের কোন কিছু না জানিয়ে ড্রেজিং শুরু করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে এমন মানুষ ও প্রকৃতিবিরুদ্ধ কাজের তীব্র প্রতিবাদ এবং নিন্দা জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে গ্রামবাসী আরও বলেন, তারা কোন ক্ষতিপূরণ চান না, কোন আর্থিক সহযোগিতাও চান না। তারা পূর্বপুরুষের কৃষিজমি রক্ষা করে সেখান থেকে জীবিকা সংগ্রহ করতে চান। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসী কৃষিজমি ও কৃষকদের জীবিকা রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সরকার ও প্রশাসনের প্রতি দাবি জানানো হয়। দাবি মানা না হলে কৃষকরা প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হবে বলেও জানান কৃষক ও জমির মালিকরা।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. আলম গাজী। এছাড়া কৃষি জমির মালিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাফতুন মুকুল, আলী রেজা মুকুল শিকদার, নজরুল ইসলাম হাওলাদার, আবু হানিফ ফকির, হুমায়ুন কবির, ওবায়দুল সরদার, বিজন কুমার বৈদ্য, মো. আলাউদ্দিন শেখ, জাকির মোসাল্লি, হেম মণ্ডল, ঝুমুর বেগম, সোমা মণ্ডল প্রমুখ।

সংবাদ সারাদিন