আমনে দাম মেলায় বোরোতে উঠেপড়ে লেগেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক

দীর্ঘদিন পর এবার আমনের ভালো দাম পেয়েছেন দেশের কৃষক। আর সেই উৎসাহেই এবারে বোরো আবাদে উঠেপড়ে লেগেছেন তারা। ইতোমধ্যেই জমি তৈরি করতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও ||

দীর্ঘদিন পর এবার আমনের ভালো দাম পেয়েছেন দেশের কৃষক। আর সেই উৎসাহেই এবারে বোরো আবাদে উঠেপড়ে লেগেছেন তারা। ইতোমধ্যেই জমি তৈরি করতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক। সমারোহে চলছে জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ উঠানো আর তৈরি জমিতে চারা লাগানো। গত মৌসুমের আমন ধানের ভালো ফলন আর মনপ্রতি ৮ থেকে ৯শ টাকা দাম পাওয়ায় বোরো আবাদে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

এ দিকে শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি বোরোর জমি তৈরি ও চারা লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউ বা জমিতে দিচ্ছেন হাল চাষ। কেউ জমির আইলে কোদাল পাড়া কিংবা জৈব সার দিতে ব্যস্ত। কেউ তৈরি করছেন সেচের জন্য ড্রেন। কেউবা তৈরি করছেন শ্যালো মেশিনের ঘর। আবার অনেকে তৈরি জমিতে সেচ দিয়ে সেটি ভিজিয়ে রাখছেন। আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করে কেউ বা বীজতলা থেকে চারা তুলে তা লাগাচ্ছেন জমিতে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছর জেলায় ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় ৬০ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১২ হাজার ৯৪ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৪৮ হাজার ২১৫ হেক্টর।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের চাষী সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে।এবার আমন চাষে করে আমরা লাভবান হয়েছি। সেই আশায় পুরোদমে আবার বোরো আবাদ শুরু করে দিয়েছি।

একই এলাকার কচুবাড়ি গ্রামের বিজয় রায় জানান, গত আমন মৌসুমে ব্রি-জাতের সোনার বাংলা, ব্রি -আঠাশ, ব্রি -৫১, জিরাশাইল ধানের ফলন ও বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে আবাদ করতে তারা বেশি আগ্রহী।

অন্যান্য বছর কোল্ড ইনজুরিতে পচন লেগে বীজ চারা নষ্ট হয়ে যেতো। কিন্তু এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো চারাও বেশ ভালো হয়েছে। সদরের ফাড়াবাড়ির বাসিন্দা মন্টু রাম জানান, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি হয়। বোরো ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পরপর সেচ দিতে হয়। আশা রাখি বোরো আবাদ হলে বেশি লাভবান হবো।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব উদ্দীন বলেন, জেলায় সবেমাত্র বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনের আবহাওয়ার গড় সর্বনিম্ন ১০ এবং সর্বোচ্চ ২৫ বিরাজ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এবং গভীর নলকূপগুলো সচল হলে খুব শিগগিরই বোরো ধান রোপণ শেষ হবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সারাদিন