আনন্দ সারাবেলা প্রতিবেদকঃ
করোনার সাথে চল্লিশ দিন যুদ্ধ করে হেরে গেলেন কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।রোববার ১৫ই নভেম্বর বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে কলকাতার বেলভিউ নার্সিং হোমে শেষ নিঃশ্বাষ ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় গেল ৬ অক্টোবর করোনা আক্রান্ত হয়ে বেলভিউ নার্সিং হোমে ভর্তি হয়েছিলেন। বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর করোনা নেগেটিভ হয়েছিলেন। কিছুদিন ভালো আবার কিছুদিন মন্দ মিলিয়েই টানা ৪০ দিনের মত হাসপাতালে ছিলেন তিনি। পরে প্রস্টেট ক্যানসার নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে ফুসফুস এবং মস্তিষ্কে। তার মূত্রথলিতেও সংক্রমণ হয়েছিলো।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। তিনি একজন অভিনেতার পাশাপাশি কবি, বাচিক শিল্পী ও চিত্রকর ছিলেন। ১৯৩৫ সালে কলকাতার মির্জাপুর স্ট্রিটে জন্ম নেন তিনি । বাবা মোহিত চট্টোপাধ্যায় পেশায় ছিলেন উকিল। মা আশালতা চট্টোপাধ্যায় গৃহবধূ। পড়াশোনা হাওড়া জেলা স্কুল থেকে। তারপর সিটি কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন ।
১৯৫৯ সালে ‘অপুর সংসার’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তাঁর। এরপর সত্যজিতের সঙ্গে মোট ১৪টি ছবিতে কাজ করেন তিনি। ৬০ বছরের অভিনয় জীবনে আড়াইশোর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র। ২০০৪ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কার পান । ২০০৬ সালে পরিচালক সুমন ঘোষের ছবির জন্য আসে জাতীয় পুরস্কার। একাধারে কবি, বাচিক শিল্পী, অভিনেতা, চিত্রকর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ২০১২ সালে ভারতীয় সিনেমার সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘দাদাসাহেব ফালকে’ দেওয়া হয়। এরপর ২০১৮ সালে ফরাসি সরকারের সেরা নাগরিক সম্মান ‘লিজিয়ঁ দ্য নর’ পান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করে টুইট করে লিখেন , ‘ফেলুদা আর নেই। অপু আমাদের বিদায় জানিয়েছেন। বিদায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। উনি এক জন কিংবদন্তী। বাংলা, ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র এক জন মহান অভিনেতাকে হারাল। ওঁকে খুব মিস করব আমরা। বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ অভিভাবকহীন হয়ে গেল’।