|| সারাবেলা প্রতিবেদন ||
বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা এমিনেন্স বাংলাদেশ এবং নরওয়ের ক্রিস্টিয়ানা ইউনিভার্সিটি কলেজের মধ্যে শুরু হলো ফ্যাকাল্টি ও স্টুডেন্ট একচেঞ্জ প্রোগ্রাম। বাংলাদেশ ও নরওয়ের মধ্যে শিক্ষা, উন্নয়ন ও যৌথ গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সম্প্রতি এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশগুলোতে শিক্ষামূলক ভ্রমণ ও প্রশিক্ষণের জন্য যেতে পারবেন।
বাংলাদেশে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ছেন এমন শিক্ষার্থীরা তিন মাসের জন্য শুধু অটাম (শরৎ) সেমিস্টারে নরওয়েতে শিক্ষা ভ্রমণে যেতে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া দুই দেশের শিক্ষকদের জন্য বছরজুড়ে নরওয়ে ভ্রমণের সুযোগ থাকেবে।এমিনেন্স বাংলাদেশ এবং ক্রিস্টিয়ানা ইউনিভার্সিটি কলেজের পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে শিক্ষা ভ্রমণের জন্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।
এই কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান। আরো যারা ছিলেন তারা হলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক প্রফেসর ডা. শাহ মনির হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য ও জনশক্তি উন্নয়নের লাইন ডিরেক্টর ডা. মোঃ নাজমুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত মি. এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন, ক্রিস্টিয়ানা ইউনিভার্সিটি কলেজ নরওয়ের প্রো-রেক্টর অব রিসার্চ এণ্ড আর্টিস্টিক ডেভলাপমেন্ট প্রফেসর ট্রিনে জে মেজা।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এমিনেন্স বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনস্বাস্থ্য গবেষক ডা. শামিম তালুকদার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “আমি মনে করি এই সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও নরওয়ের মধ্যকার পারস্পারিক বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং যৌথ উন্নয়নের একটি নতুন দিক খুলে গেলো। নরওয়ে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি দেশ যারা স্বাস্থ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য গবেষণার জন্য প্রসিদ্ধ। বাংলাদেশের অনেক তরুণ চিকিৎসক ও গবেষক রয়েছেন যারা নতুন প্রযুক্তি ও চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। আমি মনে করি এই দুইটি প্রতিষ্ঠানের পারস্পারিক সহযোগিতায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণার যথেষ্ঠ উন্নতি হবে এবং বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা নতুন ধরণের জ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক প্রফেসর ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, “একটি কার্যকরী শিক্ষা ব্যবস্থা নির্ভর করে যথাযথ অবকাঠামো, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শিক্ষক, অবাধ শিক্ষা উপকরণ এবং পরিশ্রমী শিক্ষার্থীর ওপর। আমি মনে করি এই দুইটি প্রতিষ্ঠানেরই যথেষ্ঠ সক্ষমতা রয়েছে এই মানদণ্ড নিরুপণ করার।দীর্ঘদিন ধরেই এমিনেন্স বাংলাদেশ এবং ক্রিস্টিয়ানা ইউনিভার্সিটি কলেজ নরওয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে এমিনেন্স করোনা মহামারী কালীন সময়ে তরুণ চিকিৎসকদের জন্য অনলাইনভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে, যা তাদের করোনা রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রমে ব্যাপক সহায়তা করেছে। আমি মনে করি এই দুইটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের এমন একটি মহতী উদ্যোগ দুই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নসহ স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
এমিনেন্স বাংলাদেশের উপদেষ্টা বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটি রংপুরের উপাচার্য প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, “আমরা মনে করি আন্তজার্তিক সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে এই করোনা মহামারীর সময়ে। আমরা যদি আন্তজার্তিকভাবে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে পারি তাহলে সেটি সবার জন্যই কল্যাণকর হবে। বাংলাদেশ এবং নরওয়ের মধ্যকার যৌথ শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের উন্নয়নে এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যে সমঝোতা চুক্তিটি সই হয়েছে সেটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এটি একটি ভালো সুযোগ তৈরি করেছে।”
বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত মি. এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন বলেন, “বাংলাদেশ এবং নরওয়ের উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের উন্নয়নে এমিনেন্স বাংলাদেশ ও ক্রিস্টিয়ানা ইউনিভার্সিটি কলেজের (নরওয়ে) মধ্যকার এই চুক্তিটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। দুইটি প্রতিষ্ঠানেরই উচিত তাদের সক্ষমতাকে কিভাবে সর্বোচ্চ কাজে লাগানো যায় তা পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে খুঁজে বের করা।”
অনুষ্ঠানে ক্রিস্টিয়ানা ইউনিভার্সিটি কলেজ নরওয়ের প্রো-রেক্টর অব রিসার্চ এণ্ড আর্টিস্টিক ডেভলাপমেন্ট প্রফেসর ট্রিনে জে মেজা বলেন, “আমরা মনে করি উপযুক্ত শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আন্তজার্তিক শিক্ষা ভ্রমণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সমঝোতার মাধ্যমে উভয় দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা অজর্ণের একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে এবং একই সাথে আমরা দুইটি দেশে উন্নত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি যা উভয় দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”
অনুষ্ঠানের সমাপনীতে এমিনেন্স বাংলাদেশের প্রধান নিবার্হী পরিচালক ডা.শামিম তালুকদার বলেন,“এমিনেন্স বরাবরই স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণা খাতের উন্নয়নে কাজ করে আসছে। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হলো এবং একই সাথে এই চুক্তি বাংলাদেশ ও নরওয়ের পারস্পারিক বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে বলে আশা রাখি।
সংবাদসূত্র: বিজ্ঞপ্তি