মধু দা’র ভাস্কর্যের ভাঙা কান পুন:স্থাপন করলো ঢাবি প্রশাসন

‘মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্কর্য’র ভাঙা কান পুন:স্থাপিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গেলো মঙ্গলবার রাতে কে বা কারা রাতের বেলা মধুর ক্যান্টিনের সামনে স্থাপিত মধুসূদন দে’র স্মৃতি ভাস্কর্যের একটি কান ভেঙে ফেলে। তবে এই দুর্বত্তপনা কে বা কারা করেছে তা এখনো নির্দিস্ট করে না বললেও সংশ্লিষ্টদের অনুমান দেশবিরোধী অপশক্তিই এক কাজ করেছে।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ||

‘মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্কর্য’র ভাঙা কান পুন:স্থাপিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গেলো মঙ্গলবার রাতে কে বা কারা রাতের বেলা মধুর ক্যান্টিনের সামনে স্থাপিত মধুসূদন দে’র স্মৃতি ভাস্কর্যের একটি কান ভেঙে ফেলে। তবে এই দুর্বত্তপনা কে বা কারা করেছে তা এখনো নির্দিস্ট করে না বললেও সংশ্লিষ্টদের অনুমান দেশবিরোধী অপশক্তিই এক কাজ করেছে।

দেশের রাজনীতির আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে থাকা ‘মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্কর্য’র একটি কান গেলো মঙ্গলবার ভাঙ্গা অবস্থায় পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ক্যানটিনের কর্মচারী মো. রুবেল (মাইকেল) জানায়, পরশুদিন ভাস্কর্যের একটি কান ভাঙা অবস্থায় দেখতে পায় তারা। কখন ভাঙা হয়েছে তা বলতে পারছে না তারা। তবে দেশে চলমান ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে এই ধরণের ঘটনায় ভিন্ন তাৎপর্য খুঁজছেন অনেকেই।

ক্যান্টিনের বর্তমান মালিক মধু দা’র ছেলে অরুণ চন্দ্র দে বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানীকে জানানো হয়। পরে প্রক্টরিয়াল টিমের কয়েকজন সদস্য এসে ভাস্কযের্র নতুন কান স্থাপন করেন। তবে প্রক্টরের ভাষ্য, মধুর ক্যান্টিনের কর্মচারীরাই নতুন কান প্রতিস্থাপন করেছে।

বিষয়টি নিয়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, “মধু দা’র ভাস্কর্য আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। তার ভাস্কর্যে যারা আঘাত করেছে তারা ইসলাম ও সংস্কৃতি বোঝে না’। যারা এই জঘন্য কাজ করেছে তাদের বলবো, রাতের অন্ধকারে এসব কাজ না করে সাহস থাকলে দিবালোক এসব কাজ করে দেখান। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অতীতের ন্যায় এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবে।’

মধুদার ভাস্কর্যে আঘাত ও কান প্রতিস্থাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমন একটি তথ্য আমার কাছে এসেছে। মধুর ক্যান্টিনের কর্মচারীরাই ভাস্কর্যটির কান প্রতিস্থাপন করেছেন। তবে ভাস্কর্যে আঘাতটি খেয়ালের বশে হয়েছে, নাকি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে, তা এখনো জানা যায়নি। কারা, কী উদ্দেশ্যে কাজটি করেছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তা খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, মধুসূদন দে, যিনি ‘মধুদা’ নামেই বহুল পরিচিত, ছিলেন মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা। মধু দা সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের কালরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁকে হত্যা করে। মধু দা’র স্মৃতির স্মরণে তাঁর নামেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থিত রেস্তোরাঁটির নামকরণ করা হয় ‘মধুর ক্যান্টিন’।

মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্কর্যটি মধুর ক্যান্টিনের সামনে থাকা গোলঘরের জানালার ঠিক পাশেই অবস্থিত। তবে শুরুতে ভাস্কর্যটি ক্যান্টিনের একটি দরজার সামনে স্থাপন করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের ১৮ই এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এমাজউদ্দিন আহমদ ভাস্কর্যটির প্রথম উদ্বোধন করেন। বর্তমান অবস্থানে ভাস্কর্যটির পুনর্নির্মাণের পর ২০০১ সালে এটির উদ্বোধন করেন সেসময়ের উপাচার্য এ কে আজাদ চৌধুরী। ভাস্কর্যটির ভাস্কর তৌফিক হোসেন খান।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন