|| সারাবেলা প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ||
গুচ্ছপদ্ধতিতে শিক্ষার্থি ভর্তি করবে এমন ২৯টি রাষ্ট্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সম্মান প্রথমবর্ষে ভর্তির জন্য আবেদন নেয়া হবে ১লা এপ্রিল থেকে। ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন। পরীক্ষা শুরু হবে ১৯শে জুন থেকে। সোমবার ৮ই মার্চ বেলা ১২টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত কোর কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকের সিদ্ধান্তমতো সাধারণ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ধারার ২০টি, ছয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তিন গুচ্ছে আলাদাভাবে পরীক্ষার আয়োজন করবে। তবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে যাচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ডিপ্লোমা কোর্স থাকায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে যাওয়ার যুযোগ নেই ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট)। আর বিশেষায়িত তিনটি—বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি বুয়েটের সঙ্গে গুচ্ছ পদ্ধতিতে যেতে চাইলেও বুয়েট সম্মতি দেয়নি। এসব বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেবে।
মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশে মোট ৫০টি পাবলিক ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকশেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘বুয়েটসহ ৫টি ছাড়া সব বিশ্ববিদ্যায়লই গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ নিচ্ছে। মোট ২৯টি বিশ্ববিদ্যালয় তিনটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে।’
সোমবার ৮ই মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত কোর কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে প্রাথমিক আবেদনে শিক্ষার্থীদের কোনো ফি দিতে হবে না। যেসব শিক্ষার্থী ২০১৯ বা ২০২০ সালে এইচএসসি/আলিম ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তারাই আবেদন করতে পারবেন। ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর বিজ্ঞান শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৮.০, বাণিজ্য শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৭.৫ এবং মানবিক শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৭.০ থাকতে হবে। তবে প্রত্যেক শাখাতে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় নূন্যতম জিপিএ ৩.৫ থাকতে হবে। শুধু এবছরের জন্যই গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯ ও ২০২০ সালে এইচএসসি পাস শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। আগামী বছর থেকে পূর্ববর্তী বছরে পাস করা অর্থাৎ সেকেন্ড টাইমার শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন না। প্রাথমিক আবেদনকারীদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য যোগ্য শিক্ষার্থীদের ফলাফল ২৩শে এপ্রিল স্বয়ংক্রিয় মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে।
গুচ্ছভুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একযোগে যতজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ রয়েছে মেধার ভিত্তিতে ততোজন শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত আবেদন করার সুযোগ দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে বাছাই করা শিক্ষার্থীদেরকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা জমা দিয়ে ২৪শে এপ্রিল থেকে ২০শে মে তারিখের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য চূড়ান্ত আবেদন করতে হবে। সকল পরীক্ষা নির্দিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রে একযোগে বেলা ১২টায় শুরু হবে। একজন শিক্ষার্থী কমপক্ষে ৫টি পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচন/চয়েস করতে পারবেন। ২০১৯ সালের পাস করা শিক্ষার্থীরা বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘কেন্দ্র’ হিসেবে চয়েস বা পছন্দ করতে পারবেন না। প্রয়োজনে পছন্দের কেন্দ্রের বাইরেও পরীক্ষা দিতে হতে পারে। আবেদনকারীরা ১লা জুন থেকে ১০ই জুন তারিখের মধ্যে এ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। ভর্তি পরীক্ষা ১৯শে জুন থেকে শুরু হবে। ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্যাদি ভর্তি সংশ্লিষ্ট ওয়েব সাইট (www.gstadmission.org এবং www.gstadmission.ac.bd) ও জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছপদ্ধতিতে ভর্তি
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষায় অংশ নেওয়া তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হলো— রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)।
ছয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলো— বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সাধারণ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ধারার ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।