কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হল নির্মানের শেষ জানেনা কেউ

|| রাকিবুল হাসান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ||

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের জন্য নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানীর নামে একটি হল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে  দ্বিতীয় আরেকটি হল নির্মাণের কাজ কার্যক্রম অনেক আগে শুরু হলেও কবে শেষ হবে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্বিতীয় ছাত্রী হলের জন্য  ২০১৭ সালের মার্চে টেন্ডার আহ্বান করে আবদুর রাজ্জাক জেবিসিএ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পটির কাজ দেয় । ১৮ মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও দীর্ঘ প্রায় ৪৫ মাসেও কাজ শেষ হয়নি এই হলের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মিতব্য হলের ভিতরের রুমে প্লাস্টার লাগানো হলেও বাইরে এখনো প্লাস্টার লাগানো হয় নি। এছাড়া, জানালার গ্রিল লাগালেও দরজা এবং জানালার কাচ লাগানো বাকি আছে। সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সংযোগও এখনো আসে নি।

ঠিকাদার মো. জাহাঙ্গীর আলম এ ব্যাপারে বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারনে শ্রমিক সংকট ছিল। কাজ করাতে পারিনি তেমন। করোনার আগে কাজ দ্রুত গতিতেই চলছিল। এছাড়াও প্রশাসনিক নানান জটিলতার কারনেও দেড়ি হয়েছে। সময়মত টাকা পাই না। আর প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন একটু সমস্যা হচ্ছে। প্রজেক্টের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছি। তবে আশাকরি এই বছরের অক্টোবরের ভিতরে আমরা কাজ শেষ করতে পারবো।’

এর আগে ২০১৯ সালের নভেম্বরেও তিনি দুই-তিন মাসের ভেতর ও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের আগে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেননি।

এদিকে তত্ত্বাবধারক প্রকৌশলী এস. এম. শহিদুল হাসান ঠিকাদারকে দোষারোপ করে বলেন, ‘টাকা, শ্রমিক ও মালামাল এ তিনটি জিনিস ঠিক থাকলে খুব দ্রুত কাজ সম্ভব। ঠিকাদারদের এগুলো ঠিক ছিল না বিধায় কাজ এতো দেড়ি হচ্ছে। এ ৩ টি জিনিসের সমন্বয় করেনি ঠিকাদার। তিনি আরো বলেন, কার্যাদেশের যে টাকা বরাদ্দ আছে সেই কাজই শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার।

ঠিকাদার কাজের গতি কমিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে জিম্মি করার চেষ্টা করছে। এখন ঠিকাদার চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

এ দিকে হল নির্মাণে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে  মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের শিক্ষার্থী সৈয়দা সুম্মা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী  নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের।বর্তমানে একটি হল থাকায় অধিকাংশ মেয়েরা হলে থাকার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

হল নির্মাণ সম্পূর্ন করতে আরো কত সময় লাগবে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. মো. আবু তাহের জানান, শেখ হাসিনা হলের কাজের যে সময়সীমা ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। ঠিকাদার আবার সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। প্রকল্পের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় ঠিকাদারকে টাকা দেয়ায়ও সমস্যা হচ্ছে। এখন মন্ত্রনালয় থেকে অফিস আদেশ আসলে আমরা টাকা দিতে পারবো। আর তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি, আগামী অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

সংবাদ সারাদিন