আলুর লোকসান মেটাতে টমেটো চাষে ঝুঁকছেন মুন্সীগঞ্জের চাষীরা

গত দুই বছর ধরে আলুতে লোকসান হওয়ায় এখন টমেটোসহ অন্য সবজি চাষে ঝুঁকছেন মুন্সীগঞ্জের কৃষকরা।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ ||

গত দুই বছর ধরে আলুতে লোকসান হওয়ায় এখন টমেটোসহ অন্য সবজি চাষে ঝুঁকছেন মুন্সীগঞ্জের কৃষকরা। এর মধ্যে টমেটো চাষে জেলার কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্ষতিকর কোন কীটনাশক ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষকরা টমেটোর আবাদ করেছেন। রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে জৈব কীটনাশক। যে কারণে এসব টমেটোতে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে না বলে দাবি কৃষি কর্মকর্তাদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গেল মৌসুমে মুন্সীগঞ্জ জেলায় ২০২ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছিলো। চলতি বছর তা বেড়ে বর্তমান সময় পর্যন্ত টমেটোর চাষ হয়েছে ২০৯ হেক্টর জমিতে। এখনও আবাদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় চলতি বছর টমেটোর আবাদ প্রায় ৩০০ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে ধারনা করা হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জ জেলায় সোনালী, ক্যাপ্টেন, মানিক, রতন, মিন্টু সুপারসহ বিভিন্ন জাতের টমেটোর চাষ হয়।

সরেজমিন ঘূরে দেখা গেছে, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মহাকালী ইউনিয়নের সাতানিখিল গ্রামে কৃষি জমিতে ৪৫ থেকে ৫০ জন কৃষক টমেটো আবাদ করেছেন। টমেটোর জমি দেখলে মনে হবে যেন টমেটোর বাগান। টমেটোর বাগানগুলো এখন সবুজের সমারোহ। দুই-একজন কৃষক তাদের জমির টমেটো বিক্রি করলেও বেশীর ভাগ কৃষকের টমেটো এখন বিক্রির উপযোগী হতে শুরু করেছে। আর ক’দিন পরেই তারা জমি থেকে টমেটো তুলে বিক্রি শুরু করবেন।

পাইকাররা জমিতে এসেই টমেটো কিনে নিয়ে মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার পাইকারী আড়তে বিক্রি করেন। আর টমেটো গাছের পরিচর্যায় কৃষক-কৃষানীসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার নারী শ্রমিকরাও কাজ করছেন।

সদর উপজেলার দক্ষিণ মহাকালী গ্রামের টমেটো চাষি সামাদ বেপারী জানালেন, টমেটোর চাষ লাভবান হওয়ায় এই বছর টমেটোর আবাদ আরও বেড়েছে। তারা কোন ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার করছেন না। যেসব গাছে ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, সেই গাছের টমেটোর মধ্যে বোটা পাওয়া যাবে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা আল মামুন জানান, মুন্সীগঞ্জ সদর, গজারিয়া, টঙ্গিবাড়ী, সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলায় এবার টমেটোর আবাদ হয়েছে বেশী। চলতি মৌসুমে টমেটো আবাদ প্রায় ৩০০ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে। তিনি আরো জানান, টমেটো আবাদ বাড়ায় পাশাপাশি সুখবর হচ্ছে, মুন্সীগঞ্জের কৃষকরা টমেটোর আবাদে রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করছেন। তারা ক্ষতিকারক কোন ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক প্রয়োগ করছেন না। তাই এই টমেটো খেলে মানুষের ক্ষতি হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই।

 

সংবাদ সারাদিন