|| সারাবেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ||
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজারের ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় এফডিআর ও ডিপিএসহ একাউন্ট খুলে প্রতারিত হয়েছেন গ্রাহকরা। তাদের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন এজেন্ট আবুল হোসেন চঞ্চল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এই এজেন্ট শাখায় কোন ধরনের লেনদেন না করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সতর্ক করেছে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
নবীগঞ্জ উপজেলার বোরহানপুর গ্রামের আবুল হোসেন চঞ্চল বছর তিনেক আগে আউশকান্দি বাজারে ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট শাখা খোলেন। আশপাশে ব্যাংকের কোন মূল শাখা না থাকায় এখানেই এফডিআর, ও ডিপিএসসহি বিভিন্ন ধরণের সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন গ্রাহকরা। এছাড়া পিনকোড দিয়ে টাকা উত্তোলন ও নগদ টাকা জমার মতো লেনদেনও চলতো এই শাখায়।
গ্রাহকদের অভিযোগ, নগদ টাকা জমা করলে এজেন্ট শাখার অসাধু কর্মকর্তারা ভুয়া সিল দিয়ে একটি জমা ভাউচার দিতেন। যারা এফডিআর, ডিপিএসসহ নানা ধরনের সঞ্চয়ী হিসাব খুলতেন তাদের নকল রিসিট দিয়ে গ্রাহকদের টাকা মুল ব্যাংকে জমা দিতো না এজেন্ট মালিক।
সম্প্রতি এক লন্ডন প্রবাসী তার এফডিআর ভাঙানোর জন্য ইসলামী ব্যাংকের নবীগঞ্জ শাখায় টোকেন নিয়ে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানান, এ নামে কোন এফডিআর হিসাব নেই তাদের নথিপত্রে। এরপরই বেরিয়ে আসে প্রতারণার এই কাহিনী।
বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় এমন অনেক গ্রাহকই আছেন যারা নগদ টাকা এজেন্ট শাখায় জমা দিয়েছেন অথচ মুল ব্যাংকের একাউন্টে তাদের সঞ্চয়ী হিসাবে কোন টাকাই জমা হয়নি। আবার অনেকে রিসিটও হারিয়ে ফেলেছেন। এই বিষয় জানতে পেরে এজেন্ট আবুল হোসেন চঞ্চল সব টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন ।
এ ব্যাপারে লন্ডন প্রবাসী আসাদুল হক জানান, তিনি বড় অংকের একটি এফডিআর করেছেন। এখন কোন হদিস পাচ্ছেন না। এজেন্ট মালিক আবুল হোসেন চঞ্চলের নম্বরও বন্ধ রয়েছে। এদিকে দিলারা বেগম নামে আরেক গ্রাহক জানান, তার স্বামী প্রায় ১০ লাখ টাকা ওই এজেন্টে লেনদেন করেছেন। তিনি সরল মনে কোন রিসিটও নেননি। এখন রিসিট ছাড়া ব্যাংক তাদের দাবি গ্রহণ করছে না।
এ ব্যাপারে আউশকান্দি বাজার ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আবুল হোসেন চঞ্চলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ইসলামী ব্যাংক নবীগঞ্জ শাখার ম্যানেজার কায়সার আহমদ বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক আউশকান্দি বাজার এজেন্ট শাখায় কোন লেনদেন না করার জন্য আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি এবং যে গ্রাহকদের ডকুমেন্টস আছে তাদের টাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করে দেবে। তিনি আরও জানান, আউশকান্দি বাজার ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আবুল হোসেন চঞ্চলের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
ম্যানেজার কায়সার আহমদ এও জানান, চঞ্চল তাদেরকে জানিয়েছেন, যাদের ডকুমেন্টস আছে তাদের টাকা সে ফেরত দেবেন। আগামি কয়েক দিনের মধ্যে এজেন্টটি নতুন ডিলারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান ম্যানেজার কায়সার আহমেদ।