|| অন্যদেশ ডেস্ক ||
বিশ্বের দুইশ’র বেশী দেশ এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। আর এই সংখ্যা ৩০ লাখে গিয়ে ঠেকেছে। তবে এইসংখ্যা ৩০ লাখই এমনটা মানতে রাজি নন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, মৃদু সংক্রমণে লক্ষণ দেখা যায়নি, এমন অনেকেই রয়ে গেছে পরীক্ষার আড়ালে। ফলে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৩০ লাখের অনেক বেশিই হবে।
নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছিল চার মাস, তার পরের ১০ লাখে সংক্রমিত হতে লাগল মাত্র দুই সপ্তাহ। আর তার পরের ১০ লাখে পৌঁছতে লাগল ১২ দিন।
সোমবার রাতে দেওয়া জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বিশ্বের ৩০ লাখের বেশি মানুষের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আর এর মধ্যে মারা গেছে ২ লাখ ১০ হাজার মানুষ।

তবে এমন দুর্যোগের মধ্যেও বিশ্বের জন্য আশার কথাও রয়েছে। আর সেটি হচ্ছে আক্রান্ত ৩০ লাখের ইতোমধ্যেই ৮ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অর্থাৎ আক্রান্তদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সেরে উঠেছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে নতুন এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মানুষের শরীরে ধরা পড়ে। এরপর থেকে দ্রুত ছড়াতে থাকে সংক্রমণ। এই ভাইরাসসৃষ্ট রোগের নাম দেওয়া হয় কোভিড-১৯।



চীনে প্রথম মৃত্যুর দুদিন পর গত ১৩ই জানুয়ারি থাইল্যান্ডে প্রথম রোগী ধরা পড়ার পর জানা গেল, এক দেশ থেকে আরেক দেশে পাড়ি জমাচ্ছে এই ভাইরাস। তারপর হু হু করে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা, দেড় মাসের মধ্যে এন্টার্কটিকা বাদে সব মহাদেশেই ধরা পড়ে রোগী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তখন এই পরিস্থিতিকে মহামারী আখ্যায়িত করে।
চীন সামলে উঠতে পারলেও পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠে ইউরোপে, স্পেন ও ইতালি রোগ নিয়ন্ত্রণ ব্যর্থ হলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গত ২রা এপ্রিল আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ায়।
ইউরোপ বিপর্যস্ত হওয়ার পর করোনাভাইরাস কাবু এখন যুক্তরাষ্ট্র। কয়েক দিনের ব্যবধানেই কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার সংখ্যা দুটোই যুক্তরাষ্ট্রকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের কাতারে নিয়ে যায়।
গেল সোমবার রাত পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৭৩ হাজার জন। এর মধ্যে মারা গেছে প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই রয়েছে স্পেন। দেশটিতে ২ লাখ ২৬ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে ২৩ হাজার জন।



ইতালি আক্রান্তের সংখ্যায় স্পেনের নিচে থাকলেও সেখানে মারা গেছে বেশি মানুষ। দেশটিতে প্রায় দুই লাখ আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে ২৬ হাজার ৯৭৭ জন। ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও তুরস্কেও আক্রান্তের সংখ্যা লাখের বেশি।
ফ্রান্সে ১ লাখ ৬২ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে ২২ হাজার জন। যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার, মারা গেছে ২০ হাজারের বেশি। জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৮ হাজার হলেও মৃত্যু তুলনামূলক কম, ৫ হাজার ৯৮৫ জন। তুরস্কেও ১ লাখ ১০ হাজার আক্রান্ত হলেও মারা গেছে ২ হাজার ৮০০ জন। আক্রান্তের সংখ্যায় চীনের (৮৩৯১২) উপরে আছে রাশিয়া (৮৭১৪৭) ও ইরান (৯১৪৭২)।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ভারতে, এই সংখ্যা এখন ২৮ হাজারের বেশি। এর মধ্যে মারা গেছে ৮৮৬ জন। পাকিস্তানে প্রায় ১৪ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে ২৯২ জন। আর বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে, মারা গেছে ১৫২ জন।