|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
দেশে গেল চব্বিশ ঘন্টায় আরও ৩৫ জন মারা গেছে। নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৫৪৮ জন। শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগে মোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন ২ হাজার ৮৩৬ জন। আর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৮ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা শুক্রবার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সবশেষ এসব তথ্য জানান।
বাংলাদেশ রোগতত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ-আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন আরও ১ হাজার ৭৬৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। তাতে এখন পর্যন্ত সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট ১ লাখ ২০ হাজার ৯৭৬ জন।
উল্লেখ্য, সারাবিশ্বে ইতোমধ্যেই কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ। প্রাণঘাতি এই ভাইরাসটির সংক্রমণ বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়ে গেল ৮ই মার্চ। ১৮ই জুলাইয়ের মধ্যেই সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ৮ই মার্চ, আর এই সংখ্যা দুই লাখ পেরিয়ে যায় ১৮ই জুলাই নাগাদ। এর মধ্যে ২রা জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ।
তবে ৮ই মার্চ প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়লেও ১৮ই মার্চ দেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগে মৃত্যু নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১৭ই জুলাইয়ের মধ্যে মৃতের সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০শে জুন এক দিনে রেকর্ড মারা যায় ৬৪ জন।
ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত চব্বিশ ঘন্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন ও নারী ৭ জন। আর এ পর্যন্ত যারা মারা গেছে তাদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ২৩৬ জন এবং ৫৯৯ জন নারী।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছে তাদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণাত্মক পরিসংখ্যান জানাতে গিয়ে নাসিমা সুলতানা জানান, মৃত ৩৫ জনের মধ্যে ৫ জনের বয়স ছিল ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ৪ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
তিনি এও জানান, এ পর্যন্ত মোট যে ২ হাজার ৮৩৫ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে এক হাজার ২৮৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৮৩০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪০১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১৯১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৮২ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩০ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৮ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের নিচে।
গেল চব্বিশ ঘন্টায় মৃতদের বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান হচ্ছে, ১১ জন ঢাকা বিভাগের, ৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৬ জন খুলনা বিভাগের, ৩ জন বরিশাল বিভাগের, ৪ জন সিলেট বিভাগের এবং ৪ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। আর মোট মৃতদের মধ্যে এক হাজার ৩৭২ জন ঢাকা বিভাগের, ৭০৭ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১৫৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ১৯৪ জন খুলনা বিভাগের, ১০৯ জন বরিশাল বিভাগের, ১৩৩ জন সিলেট বিভাগের, ১০৪ জন রংপর বিভাগের এবং ৫৮ জন ময়মনসিংহ বিভাগের।
নমুনা পরীক্ষার তথ্যে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৭৭টি ল্যাবে ১২ হাজার ২৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লাখ ৯১ হাজার ৩৪টি। তবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সেবা নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েব সাইট www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’লিংকে অথবা http://app.dghs.gov.bd/covid19-complaint লিংক ব্যবহার করে পাঠানো যাবে।