|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না করোনা সংক্রমণ । সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার জানানো সবশেষ তথ্যমতে গেল ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ৬৮৮ জন। দেশের প্রাণঘাতি এই ভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে এটি সর্বোচ্চ। আর নতুন এই সংখ্যা মিলিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১০ হাজার ১৪৩ জন।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে যুক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা সবশেষ এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘একদিনে এত বেশি নতুন রোগী আর কখনও বাংলাদেশে শনাক্ত হয়নি। তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে আরও পাঁচজন মারা গেছেন গত এক দিনে; তাতে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮২ জন। সুস্থ ঘোষণা করবার নতুন গাইডলাইন মতে বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন আরও ১৪৭ জন। এনিয়ে এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ২১০ জন সুস্থ হয়েছেন।
তিনি জানান, সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত সময়ে যে পাঁচজন মারা গেছেন, তাদের তিনজনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, এক জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, আর একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে তিন জন ঢাকার, এক জন সিলেটের এবং একজন ময়মনসিংহের মানুষ।
এছাড়া এখন পর্যন্ত দেশে যে ১৮২ জন মারা গেছে, তাদের মধ্যে পুরুষের হার ৭৩ শতাংশ, বাকি ২৭ শতাংশ নারী। আর এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ২৭ শতাংশের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ১৯ শতাংশের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৭ শতাংশের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৩ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ এর মধ্যে এবং ২ শতাংশের বয়স ছিল ১০ বছরের নিচে।
আক্রান্তের হার বিশ্লেষণ জানিয়ে নাসিমা সুলতানা জানান, সারা দেশে কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই পুরুষ। এছাড়া ৩রা মে পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলা, চট্টগ্রামে কুমিল্লা জেলা, সিলেটে হবিগঞ্জ জেলা, রংপুর বিভাগে রংপুর জেলা, খুলনা বিভাগে যশোর, ময়মনসিংহ বিভাগে ময়মনসিংহ, রাজশাহীতে জয়পুরহাট, বরিশালে বরিশাল জেলাতেই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
সুস্থ হওয়া রোগীদের তথ্য দিতে গিয়ে নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৪ জন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ১৩ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১১ জন, মহানগর জেনারেল হাসপাতালে ৭ জন, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ১৩ জন, লালকুটি হাসপাতালে ৪ জন, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলার হাসপাতাল থেকে ১১ জন, চট্টগ্রামে ৭ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, ময়মনসিংহে ১৭ জন, রংপুর বিভাগে ৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
নমুনা পরীক্ষা প্রসঙ্গে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, বর্তমানে সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩৩টি ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব ল্যাবে ৬ হাজার ২৬০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর খোঁজ মেলে গত ৮ই মার্চ; তার দশ দিনের মাথায় প্রথম একজন মারা যান।#