|| অন্য দেশ ||
যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষে কমপক্ষে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছে। ওরেগনের প্রধান শহর পোর্টল্যান্ডে স্থানীয় সময় শনিবার রাতে এ সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কয়েকজনকে আটক করেছে।
এপি জানিয়েছে, প্রায় ছয়শো গাডি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের একটি কার-ক্যারাভান র্যালী শনিবার রাতে পোর্টল্যান্ড শহরে প্রবেশ করে। এসময় র্যালির কিছু গাড়ি থেকে বাইরে ফায়ার-বল ও পিপার স্প্রে ছোঁড়ার ঘটনাও ঘটে। র্যালিটি পোর্টল্যান্ড শহরতলী পৌঁছলে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সমর্থকদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত তিন রাউন্ড গুলির আওয়াজ শোনার কথা জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত এপি’র ফটোগ্রাফার। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ মেডিকরা গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে নিয়ে কাজ করছিল বলে তিনি জানান। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির মাথায় শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী গ্রুপ ‘প্যাট্রিয়ট প্রেয়ার’র চিন্হ-সম্বলিত হ্যাট ছিল বলে জানিয়েছেন উপস্থিত এক ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে সিএনএন জানায়, মূলতঃ ওরেগনের বাইরে থেকে আসা গাড়িবহরটিকে লক্ষ্য করে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়ানো বিক্ষোভকারীরা নানারকম দুয়োধ্বনি দিচ্ছিল। ট্রাম্প সমর্থকরাও এসময় বিক্ষোভকারীদের দিকে ফায়ার-বল, রং ও পিপার স্প্রে ছুঁড়ছিল।
ওরেগনের ঘটনা নিয়ে ট্রাম্প সমর্থক ও বিরোধীরা পরষ্পরকে দুষছে। ট্রাম্পপন্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনাকে ‘বিদেন রায়ট’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রচার করছে। তারা এ ঘটনার জন্য ফ্যাসিবাদবিরোধী এন্টিফা আন্দোলনকে দায়ী করছে। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধীরা টুইটার ও ফেসবুকে হ্যাশট্যাগ করছে ‘ট্রাম্প রায়ট’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘটনার জন্য ওরেগনের মেয়র ও প্রশাসনকে দায়ী করেছেন। ডেমোক্রেটিক দলভূক্ত মেয়র ও পুলিশ প্রধানকে ‘অদক্ষ’ বলে অভিযুক্ত করে ট্রাম্প বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ চাইলে ন্যাশনাল গার্ডকে ডেকে এক ঘন্টারও কম সময়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারতো্।
সামাজিকমাধ্যম টুইটারে দেয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী দিনগুলোতে আরও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলো চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের বীর ন্যাশনাল গার্ডকে ডাকতে পারে।
তিন মাসেরও বেশি সময় আগে মিনেপলিস শহরে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর থেকে প্রতিদিন রাতে পোর্টল্যান্ডে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ওই শহরে বাইরে থেকে মানুষ ও গাড়ি পাঠিয়ে র্যালী করিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই দায়ী করতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন টুইটার ইউজারদের অনেকে।
এদিকে পোর্টল্যান্ডের ঘটনায় মন্তব্য করতে গিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, মার্কিন মূল্যবোধ যখন হুমকির মুখে পড়ে তখন আমরা জোরালো প্রতিবাদ চাই। আমি চাই বিক্ষোভ অব্যাহত থাকুক।