গেল ৩ মাসে সবচে কমসংখ্যক নমুনা পরীক্ষা, মৃত ২১

একেতো ঈদ। তারওপর ল্যাবগুলোতে ঈদের ছুটিতে পরীক্ষা কার্যক্রম চলছে কি চলছে না এ নিয়ে দ্বিধা আর পরীক্ষায় অনীহা-সবমিলিয়ে নমুনা দিতে আসা মানুষের সংখ্যা হয়তো এতোটাই কম হয়েছে।

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

ঈদের পরদিন সারাদেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হিসাব জানাতে গিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গেল চব্বিশ ঘন্টায় প্রাণঘাতি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে ২১ জন। আর নতুন করে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে ৮৮৬ জনের শরীরে। ঈদের দিন সকাল আটটা থেকে রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত সময়ে সারাদেশের নির্ধারিত ল্যাবগুলোতে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৬৮৪টি। যা কিনা গেল তিনমাসে সবথেকে কম।

সর্বশেষ এক দিনে এর চেয়ে কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল গত ২৬ এপ্রিল। সেদিন ৩ হাজার ৪৭৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। আর এক দিনে রোববারের চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ ৯ মে, সেদিন ৬৩৬ জন নতুন রোগী শনাক্তের তথ্য দেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

একেতো ঈদ। তারওপর ল্যাবগুলোতে ঈদের ছুটিতে পরীক্ষা কার্যক্রম চলছে কি চলছে না এ নিয়ে দ্বিধা আর পরীক্ষায় অনীহা-সবমিলিয়ে নমুনা দিতে আসা মানুষের সংখ্যা হয়তো এতোটাই কম হয়েছে।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে দেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণের সবশেষ তথ্য জানাতে এসে প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানা জানিয়েছেন, গত এক দিনে সারা দেশে বিভিন্ন ল্যাবে ৩ হাজার ৬৮৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাতে আরও ৮৮৬ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আর সবশেষ এই সংখ্যা নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৬ জন হয়েছে।

রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে; এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৫৪ জনে।

এদিকে রোগতত্ব ও রোগনিয়ন্ত্রণ দফতর-আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাব বলছে, বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন রোগীদের মধ্যে গেল চব্বিশ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৮৬ জন। এ নিয়ে সারাদেশে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৩৯ জন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ই মার্চ, আর ১৮ই জুলাইয়ের মধ্যেই তা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ২রা জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ই মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮শে জুলাইয়ের মধ্যেই সেই সংখ্যা তিন হাজারে পৌঁছে। এর মধ্যে ৩০শে জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মারা যাওয়ার খবর জানানো হয় সরকারের তরফ থেকে। যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৭৭টি ল্যাবে ৩ হাজার ৬৮৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে মোট ১১ লাখ ৮৯ হাজার ২৯৫টি নমুনা। গেল ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ০৫ শতাংশ, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন