কোভিডে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ২৪৭ জনের রোগী শনাক্তেও রেকর্ড

দেশে একদিনে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ও রোগী শনাক্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। রোববার সকাল আটটা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়ে ২৪৭ জন মারা গেছে। এ সময় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ১৯২ জন।

|| সারাবেলা প্রতিবেদক ||

ঈদের আগে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, এতে কোভিড পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেবে। তাদের সেই কথাই সত্য হতে বসেছে। দেশে একদিনে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ও রোগী শনাক্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। রোববার সকাল আটটা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়ে ২৪৭ জন মারা গেছে। এ সময় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ১৯২ জন। সোমবার দেশে প্রথমবারের মতো একদিনে ১৫ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদিন নমুনা পরীক্ষাও হয়েছে সবচেয়ে বেশি, ৫০ হাজারের ওপরে।

সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর হয়েছিল গত ১৯শে জুলাই, ২৩১ জনের। আর একদিনে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৭৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল গত ১২ই জুলাই।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৫০ হাজার ৯৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ২২৮ জনের। ওই সময় রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১১ হাজার ২৯১ জন। রোগী শনাক্তের হার ছিল ৩০ দশমিক ০৪ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৭। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৯ হাজার ৫২১ জনের। আর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৯ হাজার ৯৭৫ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৫২ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৬১ জন, খুলনা বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। বাকিরা অন্যান্য বিভাগের।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপর বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ কমবেশি হলেও প্রায় দুই মাস ধরে দেশে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ পালন করা হয়। এ সময় সব ধরনের অফিসের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই বিধিনিষেধ আট দিনের জন্য শিথিল থাকার পর গত শুক্রবার থেকে আবার দুই সপ্তাহের লকডাউন শুরু হয়েছে। ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষের শহর থেকে গ্রামে যাওয়া এবং তাদের ফিরে আসায় সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি কমিটি ঈদ ঘিরে বিধিনিষেধ শিথিলের সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছিল।

 

সংবাদ সারাদিন