আপদনিবারক ক্লোরোকুইন সঙ্গে ভিটামিন সি ও ডি

|| সারাবেলা ডেস্ক ||
করোনাভাইরাস পরাজিত করার পাশাপাশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত বিশেষ করে স্বাস্থ্যসুশ্রষা কর্মী অন্যান্য কাতর মানুষকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপজুড়ে নানানো পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবথেকে কার্যকর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে ক্লোরোকুইন বা হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন। যা কিনা ম্যালেরিয়া সারাতে এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রারাইটিস ও লুপ্যসের বিরুদ্ধে থেরাপি হিসেবে বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
আশার কথা এই যে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধেও এটি কাজ করছে। তবে তা অতি অবশ্যই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আগে কিংবা সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি প্রয়োগ করলে বেশ কাজে দেবে। এমনকি অসুস্থতার মাত্রাটাও অনেকটা কমিয়ে রাখবে। তবে এটি কতটা কাজে দেবে, উল্টো ক্ষতির কারণ হবে কিনা কিংবা আদৌ কাজ করবে কিনা তা এখন পর্যন্ত সর্বজিজ্ঞাস্যই রয়ে গেছে।
কভিড-১৯ যে ভাইরাসের কারণে হয়, সেটি আমাদের শরীরের কোষগুলোতে ঢোকে পেছনের দরজা দিয়ে। আর কোষের ভেতরে ঢুকেই যখন এ্যাসিডিক ও ভিনেগারের মত ক্ষারীয় পরিবেশ পায় তখনি সক্রিয় হয়ে ওঠে। হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন মানুষের শরীরের ভেতরের এ্যাসিডিক ও ভিনেগারের মত ক্ষারীয় রস নি:সরন বন্ধ করে দেয়। ফলে এই ভাইরাসটি সক্রিয় হওয়ার মত পরিবেশ পায় না। এজন্যই বলা হচ্ছে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ওষুধটির কার্যকারিতার বিজ্ঞানভিত্তিক যৌক্তিকতা রয়েছে।
মাহির ওজমেন, তুরস্কের ইসতিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের সার্জারির অধ্যাপক। তিনি বলছেন,‘ ক্লোরকুইনের সঙ্গে জিঙ্ক ও ভিটামিন সি ও ডি মিশিয়ে প্রয়োগ করা হলে তা সবথেকে বেশী কার্যকর হতে পারে। তিনি ইতোমধ্যেই তার নিজের, পরিবারের সদস্য এবং সুশ্রষাকর্মীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে দেখছেন তার এই ফরমুলা কাজ করে কিনা।
এ নিয়ে তিনি একা নয়, তার সঙ্গে রয়েছেন একজন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, আইসিইউ কর্মী এবং দুইজন সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ। ওজমেন বলছেন, ইতোমধ্যেই ৯৮জন স্বেচ্ছাকর্মীকে দিয়ে তিনি এটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। আশা করছেন জুলাই নাগাদ তার এই পরীক্ষার কাজ শেষ করতে পারবেন।
ওজমেন জানান, হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন জিঙ্ককে সহায়তা করে সংক্রমিত কোষগুলোর ভেতরে ঢুকে ভাইরাস নির্মূল করতে। আর ভিটামিন সি ও ডি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যাদের ওপর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে তাদেরকে হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন দেয়া হচ্ছে প্রতি তিন সপ্তাহে একবার। আর ভিটামিন ট্যাবলেড দেয়া হচ্ছে দিনে একটি করে। তবে যাদের কিডনি সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন দেয়া হচ্ছে একদিন পরপর। এভাবে পরীক্ষা প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর প্রত্যেকের কোভিড-১৯’র এন্টিবডি চেক করা হবে, এই কারণে যে তাদের শরীরে সংক্রমণ রয়েছে কি না।
তবে এটিকে করোনাভাইরাস নির্মূলের চূড়ান্ত প্রতিষেধক বলা যাবে না। এটি মূলত আপদনিবারক। এভাবে ঠেকিয়ে রাখার মাধ্যমে আমরা যে সময়টা পাবো সেসময়ে ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলতে পারবো বলে আশা করছেন ওজম্যান।#

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন