করোনাকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচার পথপদ্ধতি রপ্ত করতে বললো হু

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস শুক্রবার বলেন, ‘বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ এ ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক ও সংবেদনশীল রয়েছেন, এমনকি যেসব অঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি হয়েছে সেখানেও।’

|| বার্তা সারাবেলা (এপি) ||

আগামী দশ বছর ধরে করোনা অভিঘাত স্থায়ী হবে জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু বলছে, প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের উপস্থিতি মেনে নিয়েই বেঁচে থাকার পথপদ্ধতি রপ্ত করতে হবে বিশ্ববাসীকে। গেল বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি প্রথম ধরা পড়ে। এরপর দ্রুতই তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সংক্রমণের মাত্রা বিবেচনায় মার্চ মাসে একে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে হু।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস শুক্রবার বলেন, ‘বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ এ ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক ও সংবেদনশীল রয়েছেন, এমনকি যেসব অঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি হয়েছে সেখানেও।’

ভ্যাকসিন তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে জানিয়ে হু প্রধান বলেন, ‘তারপরও আমাদের অবশ্যই এ ভাইরাস নিয়ে বাঁচতে শিখতে হবে এবং আমাদের যা আছে তা নিয়েই লড়াই করতে হবে। পরতে হবে মাস্ক। মেনে চলতে হবে জনদূরত্ব। সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বিষয়টি অভ্যাসে পরিনত করতে হবে।’

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, গেল ডিসেম্বরে প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সময়ে বিশ্বজুড়ে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৭শ’ ৪০ জন মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। আর মারা গেছে ৬৭ লাখ ৯ হাজার ৬শ জন।

বার্তা সংস্থা এপি জানাচ্ছে, সবশেষ মৃতের সংখ্যা বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে এখন বিশ্বে তৃতীয় অবস্থান করে নিয়েছে মেক্সিকো। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার নতুন করে ৬৮৮ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মেক্সিকোতে মোট মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৬৮৮ তে দাঁড়িয়েছে। আর যুক্তরাজ্যে শুক্রবার পর্যন্ত মারা গেছে ৪৬ হাজার ১১৯ জন।

অন্যদিকে বাংলাদেশে মার্চ মাসের ৮ তারিখে প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। প্রথম মৃতের ঘটনা ঘটে ১৮ই মার্চ। এরপর থেকে শুক্রবার নতুন করে ২১ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গেল প্রায় পাঁচ মাসে মোট মারা গেছেন ৩ হাজার ১৩২জন। আর এ পর্যন্ত সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৩৯ হাজার ৮৬০ জনে পৌঁছেছে।

এদিকে শুরু থেকেই সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেও নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে ভিয়েতনামে। কর্মকর্তারা বলছেন, শনিবার তৃতীয় একজন মারা গেছেন করোনা সংক্রমনে। ৯৯ দিন আগে প্রথম একজন মারা যাওয়ার পর দেশটি নতুন করে করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর সর্বাত্মক চেস্টায় নেমেছে।

ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনে নতুন করে সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পেরেছে বলে দাবি করেছে দেশটির সরকার। তবে সবশেষ দেশটির উত্তরপশ্চিমের প্রদেশ ঝিনজিয়াংয়ে সংক্রমণের মাত্রা অনেকটাই বেড়েছে।

হংকংয়েও সংক্রমন বেড়েই চলেছে। ৭৫ লাখ মানুষের এই ছোট্ট দেশটিতে শনিবার নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে ১শ’র বেশী মানুষ। রাষ্ট্রিয়ভাবে সবাইকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করবার পাশাপাশি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে খাবারের দোকানগুলোতে।

ভারতে গেল চব্বিশ ঘন্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে ৫৭ হাজার ১১৮ জন। এ নিয়ে প্রায় ১২৫ কোটি মানুষের এই দেশটিতে এ পর্যন্ত ১৭ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। যাদের মধ্যে শুধু জুলাইমাসেই সংক্রমিত হয়েছে ১১ লাখ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন