|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ও প্রতিনিধি, সিলেট ||
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন এক চিকিৎসক। ডা. মঈনউদ্দিন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগরে সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। প্রায় পঞ্চাশ বছর বয়সী এই চিকিৎসক করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে সবাই বলেছে, বাসায় থাকো, ভাল হয়ে যাবে। ওর ভাল লাগে না। নিজে চিকিৎসক হয়ে টের পায় কোথাও একটা সমস্যা হচ্ছে। সিলেটের কোভিড চিকিৎসার জন্য ডেডিকেটেড শামুসুদ্দিন হাসপাতালে ওকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। সাধারণ রোগীদের ক্ষতি হবে বলে ডা. মইনকে সিলেট মেডিক্যালের আইসিইউতে নেওয়া হয়নি।
চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসতে ডা. মঈন মেসেজ পাঠান এফডিএসআরের মহাসচিব ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। পদমর্যাদার ঘাটতিতে ওনাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আনা যায়নি।
পরিবারের লোকজন জানান, সিলেটের কোন অ্যাম্বুলেন্স ওনাকে ঢাকায় আনতে রাজি হয়নি। তারপর কোনমতে একটা অ্যাম্বুলেন্স যোগাড় করে ঢাকায় এনে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ডা. মঈনকে। গত দুদিন ধরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ভেন্টিলেটরে নেওয়া হয়। সবকিছু ব্যর্থ করে দিয়ে বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার ডা. মঈন মারা যান।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হলেও এই প্রথম কোনো চিকিৎসকের মৃত্যু হলো।
ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবিএম বেলায়েত হোসেন জানিয়েছেন, “কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে তিনি (সিলেটের চিকিৎসক) আমাদের এখানে এসেছিলেন। গত তিন দিন তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। রেসপিরেটরি ফেইলিওরের কারণে আজ তার মৃত্যু হয়।”
ওসমানী মেডিকেলের ওই চিকিৎসকের নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হয় গত ৫ই এপ্রিল। এরপর থেকে তিনি সিলেট শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় নিজের বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন।
শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ৭ই এপ্রিল রাতে তাকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিলেটে এই হাসপাতালেই কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তার ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন পড়ে। পরদিন বিকালে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসমানী মেডিকেলের ওই চিকিৎসকই সিলেটে শনাক্ত হওয়া প্রথম কোভিড-১৯ রোগী। কীভাবে তিনি সংক্রমিত হলেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকাশ করেনি।
মেডিসিন ও হৃদরোগের চিকিৎসক ওই সহকারী অধ্যাপক সিলেটের ইবনে সিনা হাসপাতালেও নিয়মিত রোগী দেখতেন।#
