করোনাকালে সৌদি আরবে বাংলাদেশিদের পাশে দূতাবাস

|| মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধি  ||

সৌদি আরবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশি অভিবাসীদের সকল ধরণের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছে দূতাবাস। কোন প্রবাসীর মধ্যে করোনা আক্রান্ত বা সন্দেহ হলে প্রবাসীদের টেলিফোনে জরুরী স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দিতে গঠন করা হয়েছে ‘’ডক্টরস পুল’’, যা গত ১১ এপ্রিল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। এ ডক্টরস পুল বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এটুআই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রবাস বন্ধু কল সেন্টারের সাহায্যে প্রবাসীদের জরুরী স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ডক্টরস পুলের মাধ্যমে প্রায় ১২ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশিকে জরুরী স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানান দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার ড. আবুল হাসান।   

রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যে কোন প্রবাসী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বা তাঁর করোনা সন্দেহ হলে তিনি যেন বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে সঠিক দিক নির্দেশনা গ্রহণ করতে পারেন। রাষ্ট্রদূত জানান সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রায় ১০০ চিকিৎসক এ ডক্টরস পুলে যুক্ত হয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া এ ডক্টরস পুলে করোনা আক্রান্ত প্রবাসী কোন সাহায্য চাইলে তাকে হাসপাতালে ভর্তিকরাসহ সকল বিষয়ে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা দূতাবাসের এ উদ্যোগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রদূত আরও জানান  করোনা ভাইরাসের কারণে সৌদি আরবে কারফিউ চলমান থাকায় আর্থিক সংকটে থাকা প্রবাসীদের জন্য গত ১৩ এপ্রিল থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে দূতাবাস ও কনস্যুলেট। এ পর্যন্ত দূতাবাস ও কনস্যুলেট থেকে প্রায় ৯ হাজার বাংলাদেশীকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সংগঠন আরও প্রায় ৬ হাজার বাংলাদেশিকে সহায়তা প্রদান করেছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের সহায়তা কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে। 

এছাড়া সৌদি আরবে ওমরা পালন করতে এসে আটকে পড়া ১২৪ জন যাত্রীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে রাষ্ট্রদূত জানান।  রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ জানান, বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। অভিবাসী বাংলাদেশিরা যেন চাকুরিচুত না হন সে জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং কোন ক্যাম্পে বাংলাদেশিরা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য সৌদি সরকার বৈধ অবৈধ সকল অভিবাসীদের জন্য করোনা আক্রান্ত হলে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছে। 

এদিকে সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের ফ্লাইট বন্ধ থাকায় বিভিন্ন কারণে মারা যাওয়া বাংলাদেশিদের মৃতদেহ দেশে পাঠানো যাচ্ছে না। সৌদি আরবের নিয়মানুযায়ী ৬০ দিনের বেশি হাসপাতালের মর্গে মরদেহ রাখা যায় না।  এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে আত্মীয়দের অনুমতি সাপেক্ষে এ সকল মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হবে।  তবে এখানে দাফন করা হলেও যেসকল প্রবাসী ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড কর্তৃক বৈধভাবে বিদেশে এসেছেন এবং বৈধভাবে কর্মরত ছিলেন তাঁদের পরিবার ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড হতে তিন লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান পাবেন।  

সসা/সাগর/এসএম

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন