চট্টগ্রাম ইউএসটিসিতে বিক্ষুব্ধ চাকরিচ্যূতরা সংঘর্ষে আহত ৫

|| অনলাইন প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ||

ছাঁটাই করা হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র (ইউএসটিসি) বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের ১৯ নার্সসহ মোট ৩৪ জনকে। চাকরি হারানো এসব মানুষের অভিযোগ তাদেরকে কোন কারণ ছাড়াই ছাঁটাই করেছে কর্তৃপক্ষ।

ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে রোববার ২৬শে এপ্রিল সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করে চাকরিচ্যুতরা। এক পর্যায়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অন্য কর্মচারীদের সঙ্গে চাকরিচ্যুতদের সংঘর্ষ বাধে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রশাসন সমর্থিত একটি গোষ্ঠি আন্দোলনরতদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, নার্সরা মাধ্যমিক পাস নয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় নার্সদের ডিগ্রি না থাকায় তাদের অব্যাহতি দিয়েছে। হাসাপতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. কামরুল হাসান বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা রয়েছে চিকিৎসা সেবায় এইড নার্স রাখা যাবে না। ডিপ্লোমাধারী নার্স দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে হবে। এমনকি প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন পুনঃনবায়ন করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে। এরই মধ্যে ২২ জনকে নতুন নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রথমধাপে যাদের একটু বয়স বেশি এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’

তবে কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. মানিক মিয়া বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান যে কারণ দেখাচ্ছে সেটা কোন যৌক্তিক কারণ হতে পারে না। এতদিন প্রতিষ্ঠান চলতে পারলে এই ১৯ নার্সের জন্য কি প্রতিষ্ঠান চলতে পারবে না? তাছাড়া এখানে তো বেশির ভাগই এইড নার্স হিসেবে কর্মরত।’

তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয় ১৫ জন আয়া এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীকেও চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। আয়া বুয়া হতেও কি ডিপ্লোমা করতে হয়? তাছাড়া তাদের চাকরিচ্যুত করার সাথে সাথে তাদের বেতনও বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সারাদেশে লকডাউন চলছে আর এই সময় তাদের বেতন ভাতা বন্ধ করে দিয়ে তাদেরকে আরও কষ্টে ফেলে দিয়েছে।’

গেল ৮ই এপ্রিল ১৯ জন নার্স এবং ১৫ জন আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে অব্যাহতি দিয়ে নোটিশ জারি করে প্রতিষ্ঠানটি। মার্চ মাসেও বেতন দেওয়া হয়নি তাদের। চাকরিচ্যুতরা বলছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে হাসপাতালটিতে চাকরি করে আসছেন। কিন্তু এখন বিভিন্ন অজুহাতে তাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। তাদের এমন একটা সময় চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে যখন দেশে ভয়াবহ সংকট চলছে। চাকরি হারানোর জন্য তারা মূলত হাসপাতালের নার্সিং সুপারেন্টেন্ডেন্ট মিনু আরা খানমসহ অন্য বেশ কয়েকজনকে দায়ী করছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন