|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত টেস্টিং কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট’ এর নমুনা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আসেননি সরকারের কোন প্রতিনিধি। তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) প্রতিনিধি উপস্থিত থেকৈ কিটের নমুনা নিয়ে গেছেন। করোনাভাইরাস শনাক্তে রোগী বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার জন্য ‘র্যাপিড ডট ব্লট’ নামের এই পদ্ধতিতে খরচ পড়বে তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা।
শনিবার সকালে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মেজর এটিএম হায়দার বীরোত্তম মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে সরকারের কোন প্রতিনিধি না আসলেও সিডিসির পক্ষে কিটের নুমনা নেন কন্সালটেন্ট কাজী মো. সাইফুল ইসলাম।
সরকারের কোনো প্রতিনিধি না আসার বিষয়ে জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “কাল হঠাৎ আমাদেরকে ঔষধ প্রশাসনের উনারা জানাল যে, উনারা আজকে আসতে পারবেন না। বিএমআরসির চেয়ারম্যান সাহেবকে অনুরোধ করেছিলাম, উনি ফোন করে আমাকে জানিয়েছেন উনি অসুস্থ, আসতে পারবেন না। আমরা আর্মি প্যাথলজি ল্যাবরেটরিকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, অনুমতি পায়নি বলে আসতে পারবে না বলে জানিয়েছে। আজকে শুধু আমেরিকার সিডিসির প্রতিনিধি এসেছেন। আজকে উনাদেরকে দিয়ে দেব। বাকীদের কাল সরকারিভাবে যার যার অফিসে আমরা পৌঁছাব।”

তিনি বলেন, “আমাদের দুঃখ যে, আজকে আপনাদের (গণমাধ্যম) আমরা এই কিটের নমুনা হস্তান্তর করতে পারছি না। কালকে উনারা (ঔষধ প্রশাসন) এটা নিয়ে বসবেন বলেছেন। জানি না কেন তারা আজকে আসতে পারলেন না।”
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে জানান জাফরুল্লাহ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাদের কোনো প্রতিনিধিও অনুষ্ঠানে ছিলেন না।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলতাফুন্নোসা, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল, মোহাম্মদ রাঈদ জমির উদ্দিন ও ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ।
এর আগে গত ১১ই এপ্রিল এ কিটের নমুনা সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিএসএমএমইউ, আইইডিসিআর, আইসিডিডিআর,বিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু তার আগের দিন কারখানায় যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক জটিলতায় কিছু কিটে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ওই অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেওয়া নভেল করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে বাংলাদেশ এখন আমদানি করা কিটের উপর নির্ভর করছে। এর মধ্যেই দেশীয় প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তে কিট উদ্ভাবনের কথা জানান।
গত ১৯শে মার্চ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে করোনাভাইরাসের কিট উৎপাদনের অনুমতি পায়। গত সাপ্তাহে চীন থেকে কাঁচামাল (রি-এজেন্ট) আসার পরপরই কিটের নমুনা তৈরির কাজ শুরু করে তারা।
বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে এই কাজে যুক্ত রয়েছেন নিহাদ আদনান, মোহাম্মদ রাঈদ জমির উদ্দিন ও ফিরোজ আহমেদ।