চিকিৎসকসহ সব করোনাযোদ্ধার জন্য হচ্ছে বিশেষ বীমা

||সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা||
করোনা সংক্রমণ বিস্তারের মধ্যেই যে পেশাজীবীরা মানুষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সেবা দিচ্ছেন তাদের জন্য বিশেষ বীমা সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে রাষ্ট্র। মঙ্গলবার রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনার কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি, ৭ই এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এ কথা জানান।
করোনা আক্রান্তদের সেবায় যারা কাজ করছেন, সেইসব চিকিৎসক ও নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার বিরুদ্ধে সরকারের যুদ্ধের সম্মুখভাগে থেকে আপনারা কাজ করছেন। সেইসঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্ট সবাইকেও ধন্যবাদ জানাই। সবার চেষ্টায় আমরা এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।
চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, যেসব চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড ১৯ সংক্রামণের শুরু থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাদের উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি আমরা তাদের সম্মানী দিতে চাই। তাদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীদের জন্য আমরা একটি বিশেষ বীমা সুবিধার ব্যবস্থা করবো। এটা নিয়ে অর্থমন্ত্রী ও অর্থসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে।
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কেউ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন তাহলে তার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা সরকার করবে। তাদের জন্য স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা আমরা করে দেবো। পদমর্যাদা অনুযায়ী আমরা ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার বীমা করে দেবো। আল্লাহ না চান, কেউ যদি মারা যান তাদের জন্য এই বীমা ৫ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে, এটা তাদের জন্য করবো যারা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। এই প্রণোদনাটা শুধু তাদের জন্যই।
তবে, যারা কাজ করেননি, নিজেদের সুরক্ষার জন্য পালিয়ে গেছেন, সাধারণ রোগীরা দ্বারে দ্বারে ঘুরে চিকিৎসা পায়নি তাদের জন্য এই প্রণোদনা নয়। তারা এটা পাবেন না।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন যদি শর্ত দেন, আমাদের দিলে আমরা আসবো, তাহলে বলবো এটা পেতে হলে- আগামী সময়ে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখবো। কীভাবে কাজ করেন তা দেখবো। সত্যিই মানুষের সেবা দিলে তাদের কথা চিন্তা করা হবে। কিন্তু শর্ত দিয়ে আমি কাউকে কাজে আনবো না। কারণ যাদের মধ্যে মানবতা বোধটা নেই, তাদের প্রণোদনা দিয়ে আনার কোনও যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না। দরকার হলে বাইরে থেকে ডাক্তার-নার্স নিয়ে আসবো। এই ধরনের দুর্বল মানসিকতা দিয়ে আমাদের কাজ হবে না।
চিকিৎসক আমাদের প্রয়োজন আছে তবে, এই মানসিকতা থাকবে কেন? মানবতা বোধ হারাবে কেন? রোগী আসলে চিকিৎসা করাতে হবে। এজন্য নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা করে যেতে পারেন। অ্যাপ্রোন পরে নেন, মাস্ক ব্যবহার করুন। রোগী কেন ফেরত যাবে। রোগী দ্বারে দ্বারে ঘুরে কেন মারা যাবে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, এটা দুঃখজনক যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র যেকোনোভাবে রোগে আক্রান্ত হয়। কিন্তু সে হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়ে করাতে পারেনি। এটা সত্যি খুব কষ্টকর, খুব দুঃখজনক। ডাক্তাররা কেন চিকিৎসা করবে না? এই রোগী কোথায় চিকিৎসার জন্য গিয়েছিল সেখানে কোন ডাক্তারের দায়িত্ব ছিলেন? আমি তাদের নামওটা জানতে চাই। তাদের ডাক্তারি বা চাকরি করবার মতো সক্ষমতা নেই। তাদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
তবে এটা ঠিক আমাদের সরকারি চিকিৎসকরা খুবই আন্তরিক। তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, এটা সারা বিশ্বের জন্য একটা আতঙ্ক। সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে- এটা সত্য। ডাক্তরের সুরক্ষার জন্য যা যা দরকার আমরা তো করে যাচ্ছি। সেখানে আমরা তো কাপর্ণ্য করছি না। দরকার হলে আরও করবো।#

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন