নরসিংদীতে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ৪

মাইক্রোবাসটি পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নরসিংদীর সাকুরা মোড়ে পৌঁছালে দ্রুতগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে রুবি আক্তার ও তার মেয়ে রাইমার মৃত্যু হয়।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি,নরসিংদী  ||

নরসিংদীতে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নরসিংদীর পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের সাকুরার মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল হক সাগর এ তথ্য নিশ্চিত করছেন।

নিহতরা হলেন- সাভার জেলার আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার আব্দুর রশিদের স্ত্রী রুবি আক্তার (৩৩), তার মেয়ে রাইমা খান (৫) ও তার ভাতিজা সাদেক খান (৮) ও কাদির মিয়ার স্ত্রী সামসুননাহার (৬০)।

আহতরা হলেন- রাজিয়া (৪০), ইউসুফ মিয়ার ছেলে রশিদ (৪০), জাহের আলীর ছেলে কাজিম উদ্দিন (৪২), সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাইফা (১২), হারুন মিয়ার স্ত্রী শারমীন (৪০), তার মেয়ে ইসরাত জাহান (৮) ও অজ্ঞাত (৪০) একজন।

পুলিশ ও আহতরা জানান, শনিবার সকালে ১৪ জন একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস যোগে আব্দুর রশিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা সাভারের আশুলিয়ার জিরাবো এলাকা থেকে সিলেটে মাজার জিয়ারত করতে গিয়েছিলেন। শাহজালাল ও শাহপরানের মাজার জিয়ারত করে জাফলং বেড়াতে যান তারা। সেখান থেকে আশুলিয়ায় বাড়ি ফিরছিলেন।

তারা জানান, মাইক্রোবাসটি পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নরসিংদীর সাকুরা মোড়ে পৌঁছালে দ্রুতগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে রুবি আক্তার ও তার মেয়ে রাইমার মৃত্যু হয়। এ সময় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। তাদের মধ্যে গুরুতর আহতাবস্থায় চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ঢাকায় নেয়ার পথে কাদির মিয়ার স্ত্রী সামসুননাহার মারা যান।

এদিকে দুর্ঘটনার পর পর পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনগুলোকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।

দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসের আহত যাত্রী আব্দুর রশিদ বলেন, ‘সিলেট মাজার জিয়ারত শেষে জাফলং বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আশুলিয়া ফেরার পথে একটি ট্রাক আমাদের মাইক্রোবাসের ওপর উঠে যায়। এরপর দেখি আমার স্ত্রী ও মেয়েসহ পরিবারের সদস্যরা রাস্তার উপর পড়ে আছে।’

প্রত্যক্ষদর্শী নান্নু মিয়া বলেন, ‘মাইক্রোবাসটি আসছিল। মুহূর্তের মধ্যেই বিকট শব্দ। মাইক্রোবাসটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। রাস্তার উপর নারী ও শিশুরা ছিটকে পড়ে। কয়েকজন দৌড়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি এবং একটা পিকআপ থামিয়ে তাদের হাসপাতালে পাঠাই।’

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আসাদুজ্জামান জানান, গুরুতর আহত চারজন নারীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের হাত থেতলে গেছে। আর চারজন মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল হক সাগর বলেন, দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ চারজন মারা গেছেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

সংবাদ সারাদিন