|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা ||
বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত উল্লাহ। একাত্তর সালে যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করলেও সেই স্বাধীন দেশেই জীবন যুদ্ধে হেরে গেছেন প্রভাবশালীদের কাছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের সামনে জীবন বাজি রেখে দাঁড়ানো মানুষটির শরীরে এখন আর তেমন শক্তি নেই। রাষ্ট্রের দেয়া আবাসভুমিটুকুও দখল করে নিয়েছেন প্রভাবশালীরা।
রাষ্ট্রের দেয়া আবাসভুমিটুকুও বেদখল হয়ে যাওয়ায় স্ত্রী আর ছেলেকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন শ্বশুরবাড়ি এলাকার অন্যের জমিতে। পাঁচ মেয়ের সবাই এখন স্বামীর ঘরে। ছেলে বাবলু মিয়া রিকশাচালক।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বুরুঙ্গি গ্রামে জন্ম রহমত উল্লাহর। ১৯৬৫ সালে মেট্রিক পাশ করেন। দেশ স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। যুদ্ধশেষে অভাব অনটনের সংসার সামলাতে ছেলে মেয়েদেরকে লেখাপড়া করাতে পারেননি।
রহমত উল্লাহ বলেন, ১৯৬৫ সালে মেট্রিক পাশ করার পর চাকরির খোঁজ করেছিলেন তিনি। এরই মধ্যে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাক সেনাদের দোসর রাজাকাররা তার বাড়ি থেকে শিক্ষাসনদসহ যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়।
দেশ স্বাধীনের পরে চাকরির সুযোগ না পাওয়ার কথা জানিয়ে বীর এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকারের আমলে বাঙ্গালী নদীর তীরে রামনগর গ্রামে তাকে দুই একর জমি দেয়া হয়। সেই জমির এক একর জোর করে লিখে নিয়ে পুরো দুই একর জমি দখল করে নিয়েছেন প্রভাবশালী গফুর মাস্টার, বাছের আলী, নুর হোসেন ও তার লোকজন।
উপায় না পেয়ে শ্বশুর বাড়ী অনন্তপুর এলাকায় অন্যের জায়গায় একটি ঘর তুলে থাকছেন তিনি। সরকারি ভাতা আর ছেলে বাবলুর রিকশা চালানোর সামান্য আয় দিয়ে কষ্টের সংসার তাদের। রহমত উল্লাহ বলেন, অনেক চেষ্টা করেও রাষ্ট্রের দেয়া সেই জমি উদ্ধার করতে পারেননি।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন এ প্রসঙ্গে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারিভাবে বসতবাড়ি দেয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করলে তাকে অবশ্যই বসতবাড়ি দেয়া হবে। তবে জমি উদ্ধারের বিষয়ে কোন কিছু বলেননি জেলা প্রশাসক।