৩ লাখ টাকা জরিমানা ও বেত্রাঘাতের সালিশ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান;
|| সারাবেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর ||
মাদারীপুরের শিবচরে দুই শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে এক সালিশ মিমাংসায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অভিযুক্তকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, বেত্রাঘাত ও এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শিবচর উপজেলার উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের যাদুয়ারচর ছাত্তার মাতদবরের কান্দিগ্রামে।
স্থানীয় ও শিবচর থানা সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের যাদুয়ারচর ছাত্তার মাতদবরের কান্দি গ্রামে দশ বছরের সম বয়সী দুই শিশু কন্যাকে স্থানীয় মৃত ধুলু মিয়া মাদবরের ছেলে আকমন মাদবর (৫০) নামে এক ব্যক্তি ওই দুই শিশু কন্যাকে জাম্বুরা খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে ঘরের ভিতরে নিয়ে বেশ কয়েকবার যৌন নির্যাতন চালায়।
পরবর্তীতে যৌন নির্যাতনের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে গত ২০ ফেব্রুয়ারী রাতে উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন হায়দার হাওলাদার নির্যাতিত শিশুকন্যার বাড়ির উঠানে এক সালিশ মিমাংসার বৈঠক করেন। সালিশে অভিযুক্ত আকমন মাতবরকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা সেই সাথে ১০টি বেত্রাঘাত ও কিল ঘুষি দিয়ে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন সালিশদাররা। সালিশ করা হলেও চেয়ারম্যানের প্রভাবে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। কিন্তু পরবর্তীতে জানাজানি হলে ৮ মার্চ রাতে শিবচর থানায় সালিশের বিষয়টি এজাহারে উল্লেখ করে অভিযুক্ত আকমন মাতবরকে আসামীকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন।
এদিকে ওই নির্যাতিত শিশুকন্যার অভিভাবকরা বলেন, চেয়ারম্যান ও শাহা মাদবরসহ সালিশকারীরা জরিমানার ৩ লাখ টাকার দায়িত্ব নিলেও সালিশ করার পরে প্রায় দুই সপ্তাহ হয়ে গেলেও আমরা কোন টাকা পয়সা এখনো পাইনি। শুধু সালিশই হইছে।
যৌন নির্যাতনের ঘটনার সালিশ করার কথা স্বীকার করে উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন হায়দার হাওলাদার বলেন, আমি ওই সালিশে যেতে চাইনি। কিন্তু এলাকার মুরুব্বিরা আমাকে সালিশে ডেকে নিয়ে গেছে। আমি মেয়ে পক্ষকে বলেছিলাম আপনারা থানায় যান, কিন্তু তারা থানায় যায়নি। পরে মুরুব্বিরা মিলে সিদ্ধান্ত নিছে।
এদিকে শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন বলেন, আমরা যৌন নির্যাতনের ঘটনায় চেয়ারম্যানের সালিশ মিমাংসার খবর পেয়েই এলাকায় ওসি তদন্তকে পাঠিয়েছিলাম। এবং গতকাল নির্যাতিত দুই শিশুর অভিভাবকদের থানায় ডেকে এনেছি। পরে নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ইউপি চেয়ারম্যানের সালিশের কথা উল্লেখ পূর্বক অভিযুক্ত আকমন মাদবরকে আসামীকে করে মামলা নিয়েছি।