জনবল ও সরঞ্জাম সংকটে নিজেই রুগ্ন সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নানানো সংকটে হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হয়। বহির্বিভাগে প্রতিদিন দুইশ’র বেশী রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এছাড়াও বর্তমানে করোনা প্রতিরোধের ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে। করোনা প্রতিরোধের ভ্যাকসিন নিতে আসা লোকজন ছাড়াও প্রতিদিন গড়ে ৫৫ থেকে ৬০ জন মা ও শিশু টিকা নিতে আসেন।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা ||

জনবল সংকটে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছে না গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চিকিৎসক সংকটে চালু করা যাচ্ছে না অপারেশন থিযেটার। উপায় না পেয়ে অস্ত্রোপচারের রোগীদের যেতে হচ্ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে। নষ্ট হয়ে আছে  আল্টাসসোনোগ্রাফ মেশিন। ইসিজি মেশিন না থাকায় হৃদরোগের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রায় ৯ লাখ মানুষের  স্বাস্থ্যসেবার ভরসা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাড়েনি প্রয়োজনীয় জনবলসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। নানানো সংকটে হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হয়। বহির্বিভাগে প্রতিদিন দুইশ’র বেশী রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এছাড়াও বর্তমানে করোনা প্রতিরোধের ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে। করোনা প্রতিরোধের ভ্যাকসিন নিতে আসা লোকজন ছাড়াও প্রতিদিন গড়ে ৫৫ থেকে ৬০ জন মা ও শিশু টিকা নিতে আসেন।

এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে আরেক উৎপাত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। যারা রোগী বের হলেই ঝাঁপিয়ে পড়েন ব্যবস্থাপত্র দেখতে ও তার ছবি তুলে নিতে। এতে রোগী ও তাদের স্বজনরা এক প্রকার বিরক্ত। কর্তৃপক্ষ নোটিশ দিলেও মেডিকেল রি-প্রেজেন্টেটিভরা বিষয়টি আমলেই নিচ্ছে না।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন চিকিৎসকের পদের মধ্যে ৫টি পদ শূন্য রয়েছে। মেডিসিন, এ্যানেসথেসিয়া, শিশু, সার্জারি ও গাইনী বিশেষজ্ঞের পদগুলো শূন্য থাকায় রোগিরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। উপজেলায় সাতটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন মেডিকেল অফিসার, একজন সহকারি মেডিকেল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন অফিস সহায়কের পদ রয়েছে। তবে সাতটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে একটিতেও নেই মেডিকেল অফিসার, চারটিতে নেই সহকারি মেডিকেল অফিসার, পাঁচটিতে নেই ফার্মাসিস্ট ও তিনটিতে নেই অফিস সহায়ক।

এছাড়াও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারি ৮৫টি পদের মধ্যে ১৭টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। ইউনিয়ন সহকারি মেডিকেল অফিসারের আট পদের মধ্যে আটটিই শূন্য রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আশরাফুজ্জামান সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন চিকিৎসকসহ জনবল সংকট ও অন্যান্য সমস্যা থাকলেও রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার আ.ম আখতারুজামান বলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসকসহ জনবল সংকট রয়েছে। জেলায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কমৃচারীর অনেক পদ শূন্য রয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় পদগুলো পুরণে একটু সময় লাগবে।

সংবাদ সারাদিন