|| সারাবেলা প্রতিনিধি, রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও) ||
চারদিকে সবুজে শ্যামল। মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে বিশাল এক শিমুলগাছ। বিকেলের সোনাঁলি রোদে গাছটির ডালে ডালে পানকৌড়ির কালোপালক যেনো আরো উচ্ছল করেছে শিমুলকে।
শিমুলের মালিক মালিক যাদব রায়। যাদব রায়ের বাড়ি উপজেলার কেউটান গ্রামে। যাদব রায় বলেন, ‘পাখিদের সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর এখানে পাখি আসে বলেই প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অগণিত পাখিপ্রেমী শুধু পাখিই দেখতে আসে। এ দেখে ভালো লাগে। শীতের মৌসুম কমার সাথে সাথে পাখিদের উপস্থিতিও কমে যায়, এক সময় ধীরে ধীরে একেবারে শিমুল গাছ পাখি শুণ্য হয়ে পড়ে। তখন বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আবার যখন গরম শেষে শীত মৌসুম ফিরে তখন এই পাখিগুলোও ফিরে আসে, তখন বুকটা ভরে যায়। পাখির কারণে কিছু ক্ষতি হলেও, সব ক্ষতি আমি মেনে নিয়েছি ।’
![](https://i0.wp.com/sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2021/02/Pankouri-03.jpg?resize=1056%2C594&ssl=1)
কুলিক নদীর পাশে সব গাছ ছাড়িয়ে মাথা উঁচু করে আছে যাদব রায়ের শিমুলগাছ। ডালে ডালে শুধু পানকৌড়ির কালোপালকের দাপাদাপি। যাদব রায়ের দেখভালে পাখিগুলোর নিরাপদ অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে গাছটি। তবে স্থানীয়রা বলছেন, এবারে একটু কম দেখা মিলছে এই পাখিদের। কারন কিছু মানুষ হাতে বন্দুক নিয়ে এসে পাখিগুলো শিকার করছেন। পাখিগুলো শিকার না করার জন্য বলা হলেও তারা কোন কথা শোনে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
কেউটান গ্রামের বাসিন্দা দুলাল বলেন, রাতে পাখিগুলো শিমুল গাছটিতেই থাকে। সকাল হলেই পাখিগুলো বেড়িয়ে পড়ে খাবারের খোঁজে। আবার সন্ধ্যা হলেই ফিরে আসে গাছটিতে। দেখতে অনেক ভালো লাগে। এই পানকৌড়িগুলো শিমুল গাছটিকে তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে বাস করছে। এক সময় এ গাছটিতে প্রচুর সংখ্যক পাখি ছিল। কিন্তু শিকারীদের কারণে এদের সংখ্যা দিনকে দিন কমে যাচ্ছে। পাখীগুলোর নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহায়তা জরুরি।
![](https://i0.wp.com/sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2021/02/Pankouri0-04.jpg?resize=1057%2C594&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2021/02/Pankouri0-04.jpg?resize=1057%2C594&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/sangbadsarabela.com/wp-content/uploads/2021/02/Pankouri0-04.jpg?resize=1057%2C594&ssl=1)
পাখিপ্রেমী সাবেক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বলেন, পাখিগুলোর কারণে ঐ এলাকার সৌন্দর্য ফিরে পায়। পাখি আমাদের পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। তাই পানকৌড়িগুলোর নিরাপত্তা সহকারে পরিচর্যা করলে এদের সংখ্যা আরো বাড়বে। শিমুল গাছটি যেন নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য প্রশাসনকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান এই শিক্ষক।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলকান জুলকার নাইন কবির বলেন, পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি পাখিগুলোর নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনিক তৎপরতা আরো জোরদার করা হবে।