|| সারাবেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী ||
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন হয়েছেন। শুক্রবার বিকালে উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশির হাট পূর্ব বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
হামলায় নিজ নিজ পক্ষের অন্তত ৫০ জন করে আহত হওয়ার দাবি করেছে দুপক্ষ। তবে আটজনের চিকিৎসা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। আহত দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলগীর হোসেন জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে ফাঁকা গুলি ও লাঠিপেটা করতে হয়েছে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বিকাল ৫টার দিকে চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকরা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সদক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে একটি মিছিল বের করেন। এই সময় একদল লোক মিছিলে বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষ আধঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এবং এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়।
সংঘর্ষের পর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ফেইসবুক লাইভে এসে তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। তিনি হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে নোয়াখালী ও ফেনীর দুই সংসদ সদস্যকে দায়ী করেন। কাদের মির্জার দাবি এই হামলায় তার কমপক্ষে ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
তবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল জানান, ওবায়দুল কাদেরসহ দলীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ‘আবদুল কাদের মির্জার কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্যের প্রতিবাদে শনিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন তিনি। এজন্য বিকালে নিজ বাড়িতে প্রস্তুতিসভা চলাকালে বাড়ির বিভিন্ন দিক থেকে অনবরত গুলি আসতে থাকে। এক পর্যায়ে আমাদের মিছিলে মির্জার অনুসারীরা হামলা চালায়।” হামলায় তার অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন বাদল।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সেলিম জানান, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বড়রাজাপুর গ্রামের আবদুল ওয়াহিদের ছেলে সাইদুর রহমান, বসুরহাট পৌরসভার আবুল কালামের ছেলে রায়হান, চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে নুরুল অমিত, ও বাংলাদেশ সমাচারের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি চরফকিরা ইউনিয়নের বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির।
এছাড়াও যারা চিকিৎসা নিয়েছেন তারা হলেন, চরফকিরা ইউনিয়নের ষাট বছর বয়সী মো. কাঞ্চন, বসুরহাট পৌর এলাকার আদনান ও মারুফ, মুছাপুর ইউনিয়নের আবুল খায়েরের ছেলে মাসুদ, চরফকিরা ইউনিযনের আবদুল মান্নানের ছেলে ফরহাদ, ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আবদুস সাত্তারের ছেলে কামরুল হাসান। গুলিবিদ্ধ চারজনসহ গুরুতর আহত পাঁচজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈদদ ফজরে রাব্বি জানান, আহতেদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সাত জনসহ মোট আট জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে দুই জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।