রাষ্ট্রিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাই এখন যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রশ্ন

প্র্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা গেলো বুধবার অধিবেশন সময়ে ক্যাপিটল ভবনে যে হামলা করেছে তাতে করে দেশটির রাষ্ট্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

 

|| বার্তা সারাবেলা ||

প্র্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা গেলো বুধবার অধিবেশন সময়ে ক্যাপিটল ভবনে যে হামলা করেছে তাতে করে দেশটির রাষ্ট্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

গেলো বুধবার মার্কিন কংগ্রেসে চলছিল যৌথ অধিবেশন। আলোচনা হচ্ছিল নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডেমোক্রেট দলের প্রার্থি জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতির প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করবার। এই সময়ে ক্যাপিটল হিলের সামনে জড়ো হয় ট্রাম্প সমর্থকরা।এক পর্যায়ে তারা নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং ভবনের ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙ্গচুর চালায়। সেসময়ে দায়িত্বরত এক ক্যাপিটল পুলিশ কর্মকর্তা এবং ট্রাম্প ভক্ত বিমান বাহিনীর সাবেক এক নারী কর্মকর্তাসহ পাঁচ জন নিহত হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওয়াশিংটনে জারি করা হয় কারফিউ। জারি করা হয় আগামি পনেরো দিনের জন্য জরুরি অবস্থা।

ছবি: রয়টার্স

দুইদিন আগে মার্কিন কংগ্রেসভবনে এই হামলা ভাঙ্গচুর আর খুনের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়ে দেশটির মানুষ। বলা হয় গেলো দুইশ’ বছরে তারা ক্ষমতার পালাবদলসময়ে এমন সহিংস প্রকাশ দেখেনি।  শুধু দেশটির মানুষই নয়, হতবাক হয়ে পড়ে পুরো বিশ্ব।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওই ভবনে নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের অধিবেশন চলাকালে নিরাপত্তা বলয় ভেঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা যেভাবে ভেতরে প্রবেশ করতে পারলো। এবং আগুন দিতে পারলো, হামলা চালাতে পারলো, নিরাপত্তাকর্মীসহ পাঁচজনকে খুন করতে পারলো-এমন সব বিষয় এখন দেশটির রাষ্ট্রিক কাঠামোয় বিরাট প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

ট্রাম্পসমর্থকদের এমন তাণ্ডবের নানা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীরা ভবনের ভেতরে ঢুকে ভাংচুর করছেন, চিৎকার করছেন। ট্রাম্প সমর্থকদের কেউ কেউ নিজেদের ওই কাণ্ডের ছবি তুলছেন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি ভিডিও সম্প্রচার করছেন। কেউ কেউ ভবনে থাকা ঐতিহাসিক নানা জিনিসপত্র ভেঙ্গে ফেলছেন বা লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন।

গণমাধ্যমের খবরে বা অনলাইনে যখন ওই সব কাণ্ডের সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে তখন বিশ্ববাসী অবাক হয়ে ভাবছিলেন, এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভবনে দেশের প্রায় সব আইনপ্রণেতারা এতটা সংবেদনশীল একটি বিষয় নিয়ে যখন আলোচনা করছেন তখন ওই ভবনের নিরাপত্তার প্রস্তুতির এই হাল কেন?

ছবি: এএফপি’র সৌজন্যে

কোথায় ইউএস ক্যাপিটল পুলিশের প্রায় দুই হাজার সদস্য। যাদের কাজ ক্যাপিটল ভবন এবং তার মাটিকে সুরক্ষিত রাখা। কেন তারা সময়মত ট্রাম্প সমর্থকদের থামাতে পারেনি। ট্রাম্প সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালিয়েই ওই বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করেছিল। তারা আক্রমণের হুমকিও দিয়েছিল। কেন তবে তাদের আটকাতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি?

বিক্ষোভকারীরা ভবনের ভিতর ঢুকে গেলে অনেক কংগ্রেস সদস্যকে নিজেকে বাঁচাতে চেয়ার বা টেবিলের নিচে মাথা নিচু করে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। পরে তাদের সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। তারপর কয়েকঘণ্টার চেষ্টায় দাঙ্গাকারীদের হটিয়ে দেওয়ার পর আবার অধিবেশন শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল। এ ঘটনার পর ওয়াশিংটন ডিসিতে ১৫ দিন অর্থাৎ আগামী ২১শে জানুয়ারি পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ২০শে জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে।

সংবাদ সারাদিন