|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট ||
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে হাসিবুল শেখ (১০) নামে মাদরাসার এক আবাসিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল রোববার সকালে উপজেলার নব্বইরশি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আলহাজ রহমতিয়া স্মৃতি শিশু সনদ হাফেজি ও কওমি মাদরাসার পাশের একটি পরিত্যক্ত ভিটা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ ।
শিশুটিকে দুর্বৃত্তরা মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করেছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। তবে কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড তা পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি।
নিহত রাতুল রহমতিয়া শিশু সদন হাফেজী ও কওমী মাদ্রাসার নাজেরানা কোরআন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল এবং মাদ্রাসায় থেকে আবাসিক ছাত্র হিসেবে পড়ালেখা করত। হাসিবুল মোরেলগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা সোবহান শেখের ছেলে।
নিহত শিক্ষার্থীর মা তাসলিমা বেগমের দাবি মাদরাসার মধ্যে তাকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়েছে। হত্যাকারী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর থানা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই‘র সদস্যরা ঘটনাস্থাল পরিদর্শন করেন। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ও মোরেলগঞ্জ উপজেলাা নির্বাহী কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ওই রাতে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, মাদরাসায় ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও আবাসিকে রাতে ৩৫ জন শিক্ষার্থী ছিলেন। আমি ফজরের নামাজ পড়তে ছেলেদের ডাকলে হাসিবুল আগে ওঠে চলে গেছে বলে অণ্যরা জানায়। কিভাবে কি হয়েছে আমি জানিনা।’
মোড়েলগঞ্জ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ইট দিয়ে তার মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। কারা কি কারণে এই শিশুটিকে হত্যা করেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শনিবার রাতে হাসিব সহপাঠীদের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে সহপাঠীরা তাকে কক্ষে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে তারা মাদ্রাসার পেছনে মাটিতে হাসিবের মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিন বিকেলে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে হাসিবুলের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা: কে এম হুমায়ুর কবির জানান, ওই শিশুর মাথাসহ মুখমন্ডলে আঘাতের চিহ্ন এবং গলায় কালো দাগ রয়েছে। মাথায় আঘাত ও শ্বসরোধ করে তাকে হত্যা করা হতে পারে। তবে ফরেন্সিক পরীক্ষার পর সুনির্দিষ্ট কারণ বলা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ জানান, মর্মান্তির ওই খবর পাওয়ার সাথে সাথে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসারকে সরেজমিনে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেক্ষে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে।