|| মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা ||
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও কারিগরি সমস্যা দেখা না দিলে আজ শনিবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতুর ১ ও ২ নম্বর পিলারে সেতুর ৩৮ তম স্প্যান ‘ওয়ান-এ’ বসানো হবে। এতে দৃশ্যমান হবে সেতুর ৫ হাজার ৭ মিটার অংশ।
তবে কোনো বৈরী আবহাওয়াসহ অন্য কোন জটিলতা দেখা দিলে একদিন পিছিয়ে ২২ নভেম্বর (রোববার) সকালে স্প্যানটি বসানো হবে। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, স্প্যানটি ১৬ই নভেম্বর বসানোর পূর্ব সিডিউল ছিলো৷ তবে নির্ধারিত দু’টি পিলার একটি ডাঙায়(স্থলে) ও অপরটি নদীতে থাকায় ড্রেজিং করে পিয়ার দুটির মাঝের স্থানটি স্প্যানবাহী ভাসমান ক্রেণের চলাচলের উপযোগী করতে হয়। এরপর কারিগরি অন্যান্য খুটিনাটি যন্ত্রাংশ প্রস্তুত করতে আরো কয়েকদিন সময় লেগে যায়। তবে এখন স্প্যানটি বাসানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, শনিবার সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন ‘তিয়াইন-ই’- ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যের ৩৭তম স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত পিলারের উদ্যেশ্যে রওনা হবে। ৩৮ তম স্প্যানটি বসানো হলে চলতি মাসে মোট ৩টি স্প্যান বসানো সম্ভব হবে।
এ মাসেই ১০ ও ১১নং পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর ডিসেম্বর মাসে ১১ ও ১২ নং পিলারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩৭টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫হাজার ৫শ ৫০মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিলারই এর মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালে খুলে দেয়ার কথা রয়েছে।