ঠাকুরগাঁও চিনিকল বন্ধ চায় না স্থানীয়রা ৫ দফা দাবি শ্রমিক-চাষীদের

ঠাকুরগাঁও সুগারমিলস্ লাভজনক করতে মিলের আধুনিকায়ন ও ডিস্টিলারি ইউনিট স্থাপন করতে হবে। ব্যাগাস থেকে কোজেনারেশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন ও সুগার বিট প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। অবিলম্বে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের গ্রাচুইটির টাকা পরিশাধ করতে হবে। আখের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে ও আঁখ চাষীদের টাকা সময় মতো পরিশোধ করতে হবে এবং সারা বছর মিল চালু রাখতে সুগার মিলগুলোকে র-সুগার আমদানির অনুমতি দিয়ে পরিশোধন কারখানা স্থাপন করতে হবে।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও ||

জেলার একমাত্র ভারী শিল্প চিনিকল বন্ধ করতে দিতে চায় না ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ। এজন্য ৫ দফা দাবিতে সুগারমিল শ্রমিক ও আখচাষীদের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে। রাষ্টায়াত্ত চিনি শিল্প রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ ঠাকুরগাঁও এর আয়োজনে শহরের রোড এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঠাকুরগাঁও চিনিকলের শ্রমিক, জেলার আখচাষী, ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের সাধারন মানুষ অংশ নেন।

ঘণ্টাব্যপী মানববন্ধনে বক্তারা ৫ দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, ঠাকুরগাঁও সুগারমিলস্ লাভজনক করতে মিলের আধুনিকায়ন ও ডিস্টিলারি ইউনিট স্থাপন করতে হবে। ব্যাগাস থেকে কোজেনারেশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন ও সুগার বিট প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। অবিলম্বে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের গ্রাচুইটির টাকা পরিশাধ করতে হবে। আখের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে ও আঁখ চাষীদের টাকা সময় মতো পরিশোধ করতে হবে এবং সারা বছর মিল চালু রাখতে সুগার মিলগুলোকে র-সুগার আমদানির অনুমতি দিয়ে পরিশোধন কারখানা স্থাপন করতে হবে।

বক্তারা এ সময় প্রশ্ন রেখে বলেন, ঠাকুরগাঁও চিনিকলের পুরাতন যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন এবং সুগার বিট থেকে চিনি উৎপাদনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংযোজন বাজেট ২০১৩ সালে একনেকে পাস হওয়ার ৭ বছর পরেও প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি কেনো?

তারা বলেন, গত ৪৪ বছরে ঠাকুরগাঁও চিনি কলের লোকসান ২৯০ কোটি টাকা। কিন্তু এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঠাকুরগাঁও চিনিকল লোকসানে থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা। বক্তারা ক্ষোভ নিয়ে বলেন, একটি অসাধু লোভী সিন্ডিকেট দূর্নীতির সাথে সমঝোতা করে সুগার মিলের এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছেনা। এমন গুটি কয়েক দূর্নীতিবাজদের লালসার কাছে জেলার ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চিনিকলটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

বুকের রক্ত রাজ পথে ঢেলে দিলে হলেও স্থানীয় এই শিল্পকে তারা দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে রক্ষা করার অঙ্গীকার জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা। তারা বলেন, ঠাকুরগাঁও চিনিকলটির যন্ত্রপাতি পুরাতন হওয়ার কারনে চিনির আহরণ কমেছে। আখচাষীরা সময় মতো আখের টাকা পাচ্ছেনা ফলে চাষীরা আখ চাষে উৎসাহ হারাচ্ছে। এক কথায় কোনরকম দায়সেরে সুগার মিলটি ধ্বংস করার লক্ষ্যে নড়েচড়ে বসেছে এসব সিন্ডিকেট চক্র এমন মন্তব্য করেন বক্তারা।

এ সময় বক্তারা আরও বলেন, ২০১৬ সাল থেকে সুগারমিল থেকে অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের বকেয়া গ্র্যাচুয়িটির ৪ কোটি টাকার দাবি জানান ও বর্তমানে শ্রমিকদের বকেয়া চার মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে আহ্বান জানান সুগার মিল কর্তৃপক্ষকে।

মিল বন্ধ না করার ও একইসঙ্গে উক্ত ৫ দফা দাবি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা না হলে বড় ধরনে আন্দোলনের হুশিয়ারি আসে মানববন্ধন থেকে।মানববন্ধনে রাষ্টায়াত্ত চিনি শিল্প রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ ঠাকুরগাঁও এর আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রুবেলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ঠাকুরগাঁও জেলা জেএসডির সভাপতি মনসুর আলী, ঠাকুরগাঁও কমিউনিস্ট পার্টির সদর উপজেলার সিপিবি’র সভাপতি আহসানুল হাবিব বাবু, জেলার প্রবীন সাংবাদিক শাহিন ফেরদৌস, জেলা উদীচীর সাধারন সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রিজু, সুগারমিলের সাবেক শ্রমিক নেতা জোবাইদুর রহমান, কৃষক নেতা আনোয়ার হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন বাবু।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন