|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
করোনায় দেশে চলমান মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো আরো ৫০ জন। নতুন এই ভাইরাস সংক্রমণে প্রথম মৃত্যুর পর থেকে এ পর্যন্ত সময়ে গেল চব্বিশ ঘন্টায় মৃত ৫০ জন নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৩ হাজার ২৩৪ জনে। অন্যদিকে নতুন করে আরো ১৯১৮ জনের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৪৪ হাজার ২০ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা দেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির সবশেষ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৮৩টি ল্যাবে ৭ হাজার ৭১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১২ লাখ ১ হাজার ২৫৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার তা ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এদিকে রোগতত্ব ও রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগ-আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাব বলছে, বাসা-বাড়ি ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন আরও ১ হাজার ৯৫৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। এ নিয়ে সারাদেশে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৬০ জনে।
বুলেটিনে জানানো হয়, এর আগে গত শনিবার কোরবানির ঈদের দিন করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসায় এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত আড়াই মাসে প্রথমবারের মত হাজারের নিচে নেমে আসে।
রোববার থেকে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কিছুটা বাড়ায় এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও আবার বেড়ে দুই হাজারের কাছাকাছি চলে গেছে।
নাসিমা সুলতানা জানান, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪৪ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী। ৪৫ জন হাসপাতালে এবং ৫ জন বাড়িতে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৯ জন ঢাকা বিভাগের, ৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের, ১ জন বরিশাল বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ৪ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এই ৫০ জনের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১৮ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ১৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
ডা. নাসিমা সুলতানা এও জানান, দেশে এ পর্যন্ত যে ৩ হাজার ২৩৪ জন এই ভাইরাসে মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪৬ দশমিক ৬০ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ২৮ দশমিক ৭৬ শতাংশের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৩ দশমিক ৮৫ শতাংশের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর বছরের মধ্যে, ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ২ দশমিক ৬৯ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, তা দুই লাখ পেরিয়ে যায় ১৮ জুলাই। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।