গঙ্গাচড়ায় তিস্তার মার্জিন ডাইকে ধস ব্রহ্মপুত্রে বাড়ছে পানি

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, রংপুর ও গাইবান্ধা ||

বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। গাইবান্ধার ফুলছড়ি পয়েন্টে নদের পানি বইছে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। গেল কয়েকদিন ধরে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানিতে তিস্তা, যমুনা, ঘাঘট ও করোতোয়া নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।

পানি বাড়তে থাকায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ৩০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বাড়ছে দুর্ভোগ, মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা ধরনের পানিবাহিত অসুখে। ডুবে যাওয়া বাড়িঘর ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে অনেকেই বরাবরের মত আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।

পানি আর মানুষের চাপে হুমকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ব্রহ্মপুত্র সংলগ্ন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা, তারাপুর, হরিপুর, কঞ্চিবাড়ী, চন্ডিপুর, কাপাসিয়া, শ্রীপুর, ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, খাটিয়ামারী, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, গিদারী, মোল্লারচর ও সাঘাটা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নিচু ও চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে।

ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান দোলন বলেন, বন্যা দুর্গতদের সহায়তা দিতে উপজেলা প্রশাসন সবসময় প্রস্তুত আছে। বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা সমাধানে নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, নতুন করে পানি বাড়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট। । তবে বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান এই প্রকৌশলী।

গংগাচড়ার পাইকানে তিস্তার মার্জিন ডাইকে ৩০ মিটার ধস

এদিকে আমাদের রংপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার গঙ্গাচড়ার আলমবিদিত ইউনিয়নে পাইকান আকবারিয়া ইউসুফিয়া ফাজিল মাদ্রাসা মাঠ সংলগ্ন তিস্তার অববাহিকার ডান পাশে নদীর পার ঘেষে করা মার্জিন ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।

রোববার সকাল থেকেই ধসের মাত্রা বাড়তে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। প্রতি বছরের মত এবারেও এই একই এলাকায় ডাইকে ধস দেখা দেওয়ায় ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে সংলগ্ন গ্রামগুলো।

স্থানীয় জুয়েল মিয়া জানান, ধসের কারণে ভাঙ্গন শুরু হলে এবারো কম করে হলেও কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যূত হয়ে পড়বে। হারাবে তাদের সহায় সম্পত্তি।

এদিকে পাইকান মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা বাকের আলী জানান, ভাঙ্গন ঠেকাতে বারবার ডাইকের এই পয়েন্টটি সংস্কার করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু ধসেও যায় প্রতি বছর। মাদ্রাসাও হুমকির মুখে পড়েছে জানিয়ে প্রিন্সিপাল বাকের আলী বলেন, ‌ধস মেরামতসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের কাছে দাবি জানান এই মাদ্রাসা অধ্যক্ষ।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের রিজার্ভ কিছু সিমেন্ট ব্লক আছে সেগুলো দিয়ে আমরা ভাঙ্গন ঠেকানোর প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রয়োজনমত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন