পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙেই খুলনাতে সমাবেশ বিএনপির

এরই মধ্যে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে প্রায় হাজার দশেক নেতাকর্মীর একটি মিছিল শনিবার ২৭শে ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১২টায় সমাবেশে যোগ দেয়। এ সময় তাদের হাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও খুলনার বিএনপি নেতা রকিবুল ইসলাম বকুলের ছবি সংবলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, খুলনা ||

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি, জিয়াউর রহমানের বীরউত্তম খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তিদাবিতে খুলনাতে মহাসমাবেশ করছে বিএনপি। শহীদ মহারাজা চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও নেতাকর্মীদের আসতে পথে পথে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা।

এরই মধ্যে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে প্রায় হাজার দশেক নেতাকর্মীর একটি মিছিল শনিবার ২৭শে ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১২টায় সমাবেশে যোগ দেয়। এ সময় তাদের হাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও খুলনার বিএনপি নেতা রকিবুল ইসলাম বকুলের ছবি সংবলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।

এরআগে সমাবেশে যোগ দিতে শনিবার সকালেই খুলনায় পৌঁছন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। ঢাকা থেকে খুলনায় আসার সময় পথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বিভিন্ন সময় তার গাড়ি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন ইশরাক।

দুপুরে খুলনা পার্টি অফিসের সামনে থেকে সমাবেশে যাওয়ার সময় দলটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালের মিছিলও আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় মিছিলে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।

পরে আজিজুল বারী হেলাল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে সমাবেশে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের মিছিলে বাধা দিয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে যে কারোরই সভা-সমাবেশ করার অধিকার আছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।

এদিকে, মহাসমাবেশের কারণে খুলনার সঙ্গে সারাদেশের ১৮টি রুটে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাস বন্ধ রেখেছে বাস মালিকরা। বিএনপির অভিযোগ, তাদের মহাসমাবেশ বানচাল করাতেই এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বাস মালিকদের। এতে সবথেকে বেশী ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী সাধারন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন, সমাবেশের অনুমতি চেয়ে কয়েক দফায় আবেদন করলেও কোনো জায়গায় অনুমতি পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া পরিবহন বিভাগের মালিকদের ডেকে নিয়ে খুলনার ১৮টি সড়কে সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া সমাবেশে জনশৃংখলা রক্ষায় মহানগরীর মোড়ে মোড়ে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বাস বন্ধের বিষয়ে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কারণ না জানানো হলেও সমিতির নেতারা বলছেন, বিএনপির মহাসমাবেশ উপলক্ষে কোনো ঝামেলা হতে পারে। ওই ঝামেলা এড়াতেই বাস চালাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকেরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক বলেন, এক দিন গাড়ি না চালালে তাঁদের ৭০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়। এ কারণে তাঁরা গাড়ি বন্ধ রাখার পক্ষে ছিলেন না। তবে মালিকেরা বাস চালাতে নিষেধ করায় তাঁরা বাস চালাচ্ছেন না। মূলত বিএনপির সমাবেশে যেন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ খুলনায় না আসতে পারে, এ কারণেই ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান শ্রমিকরা।

এদিকে বিএনপির অভিযোগ. শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির অন্তত ৩০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতানি পরোয়ানা ছাড়াই আটক করা হয়েছে। তবে বিএনপির এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সংবাদ সারাদিন