হুহু বাড়ছে তিস্তার পানি বন্যার শঙ্কায় নদীপাড়ের মানুষ

ভারি বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তা পানি বাড়ছে প্রতিদিনই। এখন পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা। পানি বাড়ার পাশাপাশি ভাঙছে শুরু করেছে নদীর পাড়। এতে করে নদীপাড়ের মানুষ পড়েছে ফি বছরের মতো ঘরবাড়ি হারানোর শঙ্কায়।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, রংপুর ||

ভারি বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তা পানি বাড়ছে প্রতিদিনই। এখন পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা। পানি বাড়ার পাশাপাশি ভাঙছে শুরু করেছে নদীর পাড়। এতে করে নদীপাড়ের মানুষ পড়েছে ফি বছরের মতো ঘরবাড়ি হারানোর শঙ্কায়।

বৃহস্পতিবার ১লা জুলাই দুপুরে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প রংপুর কাউনিযা তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচে। এখানে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। এদিকে ব্যারাজ রক্ষায় ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ৬টা থেকে থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। সর্বশেষ দুপুর ১২টায় পানি ৫২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার ছোঁয়। প্রতিমুহূর্তেই বাড়ছে নদীর পানি।

জানা যায়, তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পানি বাড়ায় তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। জেলাজুড়ে ভারী বৃষ্টি আর উজানের ঢলে মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করে। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বয়ে যায়। বেলা ১২টা থেকে নদীতে পানি বাড়তে থাকে।

পানির বাড়তে থাকায় ব্যারাজের ভাটি এলাকা গঙ্গাচড়ার প্রায় ১৫টি চরের দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধের ২শ’ মিটার এলাকা ভেঙে গেছে। ইউনিয়নের চিলাখাল, চর মটুকপুর, বিনবিনা এলাকার এক হাজার ২০০ পরিবার ও লক্ষিটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, চর ইচলী, পশ্চিম ইচলী এলাকায় ৬০০ পরিবার এবং গজঘন্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, জয়দেবসহ নিচু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 

বাড়িঘরে পানি ওঠায় বিনবিনা এলাকায় কিছু মানুষ গবাদিপশু, বাড়ির আসবাবপত্রসহ রাস্তায় কিংবা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, তাঁর ইউনিয়নের চিলাখাল, উত্তর চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনা মাঝের চর, সাউদপাড়া ও বাবুরটারী বাঁধেরপার ও বিনবিনা এলাকায় এক হাজার ২০০ পরিবার এখন পানিবন্দি। তিস্তার পানি কয়েকদিন স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। মঙ্গলবার রাত থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে পানি। পানি থেকে বাঁচতে কিছু পরিবার উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।

এ বিষয়ে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৗশলী আহসান হাবীব বলেন, ‘উজানে ভারি বৃষ্টির ফলে তিস্তার পানি বাড়ছে। এখন পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। বন্যার ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছ। বন্যার্তদের সহায়তা দেয়ার জন্য শুকনো খাবার মজুত রয়েছে।

সংবাদ সারাদিন