|| সারাবেলা প্রতিবেদক ||
চলমান ‘কঠোরতম’ বিধিনিষেধের মধ্যে কারখানা খুলে দেয়ায় শ্রমিকদের কর্মস্থলে আসার সুবিধার্থে বাস ও লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরআগে বৃহস্পতিবার রাতে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১লা আগস্ট থেকে শিল্পকারখানা চালুর অনুমতি দেয় সরকার। শুক্রবার এই খবর প্রকাশের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকার পথ ধরেছেন শ্রমিকেরা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভ্যান-রিকশাসহ নানাভোগান্তিতে কর্মস্থলে আসছেন তাঁরা।
শনিবার ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে বহু মানুষকে হেঁটে আসতে দেখা যায়। ঢাকামুখী মানুষের ঢল নামে শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার রাত থেকে আগামীকাল রোববার পর্যন্ত সারা দেশ থেকে শ্রমিকদের ঢাকা নিয়ে আসার জন্য বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাত সাড়ে ৮টার দিকে গণমাধ্যমকে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শ্রমিকদের আনার জন্য আজ(শনিবার) এবং কাল(রোববার) ১২টা পর্যন্ত বাস ও নৌবাহন চলাচলে বাধা না দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
এর কিছুক্ষণ আগে বিআইডব্লিউটিএর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান বলেন, এই মুহূর্ত থেকে আগামীকাল রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেহেতু ১লা আগস্ট থেকে শিল্পকারখানা চালু হচ্ছে। তাই শ্রমিকদের যাতায়াতের কথা বিবেচনা করে লঞ্চ চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে পরিবহনমালিক–শ্রমিকদের সূত্র জানিয়েছে, তাঁরাও শ্রমিকদের আনার কাজে বাস চলাচলের বিষয়টি জেনেছেন। উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন গন্তব্য থেকে বাস চালানোর প্রস্তুতি চলছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আমাকে শাজাহান খান জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা হয়েছে। শ্রমিকদের আনার জন্য বাস চলাচল করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।’ শাজাহান খান পরিবহনশ্রমিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, শ্রমিকদের আনা–নেওয়ার জন্য চলাচলকারী যানবাহনে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। তবে লিখিত কোনো আদেশ দেওয়া হবে না। এই বিষয়ে মৌখিকভাবে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানার কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরার সুবিধার্থে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সব গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। আগামীকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশের সব নৌরুটে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (ট্রাফিক) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী কলকারখানার কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরার জন্য নৌযান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে।’ এ সময়ে বিভিন্ন রুটে ফেরির পাশাপাশি লঞ্চও চলবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের কারণে গত ২৩শে জুলাই থেকে দেশের সব নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল।