|| ডা. শামীম তালুকদার ||
বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি এবং প্রাণঘাতি এই অভিঘাত থেকে বের হয়ে আসার যাবতীয় উদ্যোগ ও বিধিব্যবস্থা যেন দিন দিনই কঠিন হয়ে পড়ছে। সংক্রমণের ধরন পাল্টাচ্ছে, বাড়ছে হারও। ভাইরাসটি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে বাড়াচ্ছে সংক্রমণের হার। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এতবেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে যে, বিশ্বের প্রতিটি দেশ স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে। প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহে বিপাকে পড়েছে উন্নয়নশীল ও গরীব দেশগুলো। বাংলাদেশও এর বাইরে না। আবার কিছু অসাধু লোক এই সংকটকালীন পরিস্থিতির ফায়দা লুটছে। মাস্ক থেকে শুরু করে হাসপাতালের বিছানা পর্যান্ত দুর্নীতির জালে ফেলে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সাথে জড়িত উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে নিম্ন পর্যায়ের কর্মচারীরাও করোনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি ও বিপর্যয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। একদিকে জীবন আর অন্যদিকে আস্থার সংকটে পড়ে সার্বিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় কঠিন সময় পার করছে তারা। জালিয়াতি থেকে অনেকে পার পেয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির প্রভাবে। অনেককে আবার নীতি দুর্বলতার কারণে শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ‘গোড়ায় গণ্ডগোল’।
বাংলাদেশে গত বছরের মার্চে করোনা প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ব্যাপক রদবদল শুরু হয়েছে। পূর্বেও বদলি বা রদবদল হয়েছে তবে এই মহামারীর বিভিন্ন সময়ে রদবদলের বিষয়টি ব্যাপকভাবে লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একবিভাগ থেকে আরেকবিভাগ এক অধিদপ্তর থেকে আরেক অধিদপ্তর এভাবে চলছে বদলি। দূর্নীতি, নতুন পদায়ন, নীতিমালা বা প্রশাসনিক বিভিন্ন কারণেই এসব বদলি বা পদায়ন হচ্ছে। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ ও আধেয় অনুযায়ী করোনা মহামারী শুরুর সাথে সাথে দেশের স্বাস্থ্যখাতে যেমন দূর্নীতির প্রসার ঘটেছে তার সাথে ঘটেছে বিভিন্ন পদে বদলির। আবার কখনো করোনা মহামারীর বিরূদ্ধে জরুরি প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির নির্দেশেও অনেক পদায়ন ও বদলি হয়েছে। পুরো বছরের বদলি ও পদায়নের মধ্যে, করোনাকে ঘিরে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও দুর্নীতির কারণে বদলি বা পদায়নের ঘটনায় বারবার সমালোচিত হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
গত বছরের জুন থেকে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সচিব পর্যায়ে বদলি হয়েছে তিন বার। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ভূমিকা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ২০২০ সালের ৪ঠা জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামকে বদলি করে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব করা হয়। বদলির মাত্র ৫ দিনের মাথায় আবার তাকে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব থেকে সিনিয়র সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। মো. আসাদুল ইসলামের পর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পান ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান। ৪ঠা এপ্রিল ২০২১ তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নানকে বদলি করে নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পান মো. লোকমান হোসেন মিয়া। ৩রা এপ্রিল ২০২১ তারিখে সুরক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. শহিদুজ্জামান অবসরোত্তর ছুটিতে গেলে সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোকাব্বির হোসেন।
২০২১ সালের এপ্রিলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞাপ্তি দিয়ে বদলি করা হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) ও মুগদা মেডিকেল কলেজ শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোসা. নাজনীন সরকারকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে, খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে এবং রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ পেডিয়াট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাজমা বেগমকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে বদলি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রশাসনিক কারণেই তাদের বদলি করা হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অধ্যাপক ডা. এসএম আব্দুর রশিদ, ডা. মুহাম্মদ ওমর খালেদ ফয়সালকে, অধ্যাপক ডা. সৃজিত কুমার ডা. নাজমা আক্তার, ডা. সাদিয়া ইসরাত জামান ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার ও স্বাস্থ্য সার্ভিসে কর্মরত ১১ জন চিকিৎসককে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বদলি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ও কোভিড-১৯ রেসপন্স ইমারজেন্সি এসিস্টেন্ট প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি তথ্য গোপন ও জাল প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে ১৩তম বিসিএস এ সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতিও পেয়েছেন!
২০২১ এর ফেব্রুয়ারিতে একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে বর্তমান স্বাস্থ্যখাতের তুলনামূলক চিত্র। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘যিনি ব্যবস্থা নেবেন তিনিই দুর্নীতিগ্রস্থ।’ দুদকের পূর্বানুসন্ধানে উঠে আসা স্বাস্থ্যে ১১ টি খাতের দুর্নীতির প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হলেও কোনো বাস্তবায়ন এখন পর্যন্ত হয়নি। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এর মহাসচিব এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি : মিলে মিশে খাওয়ার একটি প্রচলন চলে আসছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও ব্যর্থ হয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
ডা. তউহীদ আহমেদ কল্লোলকে ৯ই জানুয়ারি ২০২১ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক থেকে সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন হিসেবে পদায়ন করা হয়। এরপর মাত্র ২৩ দিনের মাথায় ২৮শে জানুয়ারি তাকে মৌলভীবাজার জেলার সিভিল সার্জন হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এছাড়াও মো. হুমায়ুন কবির তালুকদার, মো. তসলিম উদ্দিন খান, বদরুন নাহার সরকার, জুলেখা আক্তার, ডা. মো. আযম সাকলায়েন ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার ও স্বাস্থ্য সার্ভিসে কর্মরত চার চিকিৎসককে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বদলি ও পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিস (ডিজিএইচএস) এর লাইন ডিরেক্টরদের পদেও পরিবর্তন আনা হয়েছে ৭ই জানুয়ারি ২০২১ তারিখে। ডা. মো. হাবিবুর রহমানকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইচআইএস এন্ড ই হেলথ-এর লাইন ডিরেক্টর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হোমিও ও দেশজ) পদে বদলি করা হয়েছে। এই পদে পদায়ন করা হয়েছে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মিজানুর রহমানকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ রেসপন্স ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্স-এর প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলামকে (ওএসডি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও লাইন ডিরেক্টর, সিডিসি এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কোভিড-১৯ রেসপন্স ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্স প্রকল্প পরিচালক করা হয়। পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকা (ওএসডি) সংযুক্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিনকে বলদি করে ওএসডি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি’র লাইন ডিরেক্টর করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত কোভিড কন্ট্রোল ইউনিটের যুগ্মসচিব ও এনসিডিসি প্রোগ্রাম ম্যানেজার-২ ডা. রিজওয়ানুল করিম শামীমের বিরদ্ধে নারী সহকর্মীদের উত্যক্ত করা, অফিস রুমেই নারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো ও সরকারী গাড়ির অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ২০২০ এর সেপ্টেম্বরে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী দেখা যায়, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলেও তিনি মহাপরিচালকের স্নেহভাজন হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়ার সাহস পাননি তাই নতুন মহাপরিচালক নিয়োগ পেলে অভিযোগটি আলোচনায় আসে।
পুরো স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা সনদ জালিয়াতি ও মালেক ড্রাইভারের প্রতারণা চক্রের কর্মকাণ্ড। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. শারমিন হুসাইন ওরফে ডা. সাবরিনা চৌধুরী ২০২০ সালের ১২ই জুলাই সনদ জালিয়াতি অভিযোগে গ্রেফতার ও বহুমুখী প্রতারক মাফিয়া সাহেদ করিমের করোনাকালীন রিজেন্ট হাসপাতালের অভিনব প্রতারণার ঘটনা ফাঁস হলে র্যাব তাদের গ্রেফতার করে। যেখানে করোনা মহামারির আতঙ্কে জনজীবন বিপর্যস্ত সেখানে তারা সাধারণ মানুষের নমুনা পরীক্ষার নামে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে। এদিকে ২৩শে জুন ২০২০ তারিখে করোনা পরীক্ষার সনদ জালিয়াতির অভিযোগে জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (জেকেজি) প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরী সহ প্রতিষ্ঠানটির ছয় কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। অনুসন্ধানে ড. সাবরিনার নাম উঠে আসে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সচিবসহ দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের থেকে শুরু করে গোটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বোকা বানিয়ে দীর্ঘ সময় জুড়ে এ প্রতারণা চালানো হয়, যা পুরো স্বাস্থ্য খাত নিয়ে প্রশ্ন তোলে। পুরো সপ্তাহ জুড়ে ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, আমেরিকা, আফ্রিকাসহ সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের করোনা মধ্যবর্তী এই সংবাদটিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। নিউইয়র্ক টাইমসে বলা হয়, বাংলাদেশে এই ধরনের সার্টিফিকেটের একটা বড় বাজার আছে। যাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আমিনুল হাসান যখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ছিলেন তখন রিজেন্ট হাসপাতাল কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়। এর ২৬ দিন পর ১৬ই আগস্ট ২০২০ তারিখে তাকে ঢাকা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়। এই পদায়নের পর তাকে আবারো ওএসডি হিসেবে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে জানা যায়, সরকারের নিযুক্ত দুই চিকিৎসক রিজেন্ট হাসাপাতালের অব্যবস্থাপনার কথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আগেই চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন। এতে মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদের অন্য হাসাপাতালে বদলি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশে।
ডা. আয়েশা আক্তার করোনাকালীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০শে আগস্ট ২০২০ অধিদপ্ততরের উপসচিব শারমিন আক্তার জাহান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ওএসডি) এবং প্রোগ্রাম ম্যানেজার-১, এনডিসি (নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ) ডা. আয়েশা আক্তারকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর মাত্র সাত দিন পর ২৭শে আগস্ট তাকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের টিবি হাসপাতালের অফিনার ইনচার্জ হিসেবে বদলি করা হয়। চিকিৎসক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, তার বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ না থাকলেও মাত্র ৭ দিনের মধ্যে অব্যাহতি, মূলপদে ফিরিয়ে নেয়া বা অধিদপ্তরের বাইরে বদলি, কোনো সরকারি নিয়মনীতির মধ্যে পড়ে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ করোনাকালী জালিয়াতি, কেলেঙ্কারী ও প্রতারণা বিতর্কের মধ্যে পদত্যাগ করেন ২১শে জুলাই ২০২০ তারিখে। করোনাভাইরাস শনাক্ত সম্পর্কে সনদ জালিয়াতি ও নানা অভিযোগের ভিত্তিতে রিজেন্ট হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়ার পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর পারস্পারিক দোষারোপের মধ্যে পদত্যাগ পত্র জমা দেন তিনি। করোনা মহামারীর প্রক্কালে অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চের শুরুর দিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিবালক ডা. মীরাজদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে। পরবর্তীতে ১৩ই আগস্ট ২০২০ তারিখে তাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়। একই সাথে তিনি জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্বও পান। করোনাকালে নানা অনিয়েমের অভিযোগের মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্যাপক রদবদলের পর তিনি এ দায়িত্ব পান।
বদলি করা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন অ্যান্ড প্রমোশনের উপপ্রধান প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হিসেবে। ২০১৯ সালের মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আগের মতো দূর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তবে বদলির সময় কোনো অভিযোগ না দেখিয়ে দাফতরিক কাজের সুবিধার্থে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ক্রমে গত ২০২০ সালের ২৭শে জুলাই এই বদলি ও পদায়ন করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
৩৯ তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রশাসন শাখার নোটিশের মাধ্যমে ৯ জনকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ও ১৮ জনকে বসুন্ধরা আইসোলেশন সেন্টার থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয় ২৬শে জুলাই ২০২০ তারিখে। এর চারদিন পর অর্থাৎ ৩০শে জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের ১১ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। যাদের মধ্যে একজন উপ-পরিচালক, পাঁচজন সহকারী পরিচালক, তিনজন সিভিল সার্জন ও দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা রয়েছেন। তবে এ বদলি বা পদায়নে কোনো অভিযোগ উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের দুজন অতিরিক্ত সচিবকেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে ৮ই জুন ২০২০ তারিখে বদলি করা হয়। এর মধ্যে হাসপাতাল অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুল ইসলামকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে এবং ওষুধ প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ইসমাইল হোসেনকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্তি সচিব হাবিবুর রহমানকে বদলি করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে (বারটন) প্রেষণে ১৮ই জুন ২০২০ এ নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০২০ সালের জুন মাসের শেষ সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কয়েকদিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ৪ জন অতিরিক্ত সচিবকে বদলি, একই সাথে এক পরিচালকসহ চার কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কয়েকদিনের ব্যবধানে এত রদবদলের কারণ দর্শানোর কথা বললে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিশ্বব্যাংক ও এডিবির অর্থায়নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘কোভিড ইমার্জেন্সি রেসপন্স এন্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রকল্প (ইআরপিপি) এবং কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স এসিস্টেন্ট এর দুই পরিচালক সরে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন। এই প্রকল্পের শুরুতেই কেনাকাটার কাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। অনিয়মের অভিযোগ উঠলে প্রকল্পের পরিচালক ডা. ইকবাল কবীরকে ২২শে জুন ২০২০ সালে সরিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। ১৩ই জুলাই প্রকল্পের পরিচালক করা হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী শামীম হোসেনকে। তবে তিনি দুই মাসের মাথায় পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে স্বাস্থ্যসেবা সচিবের কাছে আবেদন করেন।
বিবিসির এডিটারস মেইলক্সে প্রেরিত চিঠিপত্রের মধ্যে বেশিরভাগ চিঠিপত্রই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিকে ঘিরে। ২০২০ সালের জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহের আলোচিত বিষয় ছিল, করোনা ভূয়া টেস্ট জালিয়াতি, কেলেঙ্কারি ও নানা বিতর্কের মধ্যে পদত্যাগ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এবং নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের নিয়োগ। আবার দেখা যায়, অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের যোগদানের পরই অধিদপ্তরে ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ২৮ কর্মকর্তাকে ২০২০ সালের ২৬শে জুলাই দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে পদায়ন, বদলি ও সংযুক্ত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে ২০২০ সালের মে মাসে কর্মচারীদের রদবদলে অসঙ্গতি দেখা যায়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জরুরিভিত্তিতে সম্প্রতি পাঁচ হাজারেরও বেশি নার্স নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৫৯ জন সদ্য নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র স্টাফ নার্সকে অন্যত্র বদলি করা হয়, যদিও নার্সিং ও মিডওয়াইফারি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের বদলি বা পদায়ন সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী নবনিয়োগ পাওয়ার পর অন্তত দুই বছরের মধ্যে কোনো প্রকার বদলি করা যাবে না। তবে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক প্রয়োজনে এই বদলি করা হয়েছে। অনুসন্ধান বলছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রভাবশালী উপসচিবের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করে একশ্রেণীর দালাল নেতা এই নিয়ম বহির্ভূত বদলি ও পদায়ন করছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবে পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়ার চিকিৎসক সনদ বাতিল করে সরকারি কোষাগার থেকে গ্রহণকৃত অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য ৭ই মার্চ ২০২১ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি ‘উত্তমের পড়ালেখা থেকে চাকরি, সর্বত্র জালিয়াতি’ শিরোনামে প্রথম আলো একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অত্র হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সময় প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তোলে দুর্নীতি দমন কমিশন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর সত্যতা নিশ্চিত করে।
২০২০ সালের মার্চে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি উদঘাটনে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে উঠে আসে মালেক ড্রাইভারের নাম। ড্রাইভার হয়েও তার সাতটি প্লট ও দুটি সাততলা বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়। এর আগে আফজাল নামে স্বাস্থ্য বিভাগের আরেক কর্মচারীও দুর্নীতির কারণে আটক হন। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, স্বাস্থ্য খাতে তিন স্তরের: উচ্চ, মাঝারি ও নিচু নামে সিন্ডিকেট আছে। মালেকসহ এখন যাঁরা ধরা পড়ছেন, তাঁরা হলেন নিচু স্তরের সিন্ডিকেট সদস্য। যাঁদের নামে মামলা হয়েছে এবং হচ্ছে তাঁরা হলেন মাঝারি স্তরের সিন্ডিকেট। আর ওপরের স্তরের সিন্ডিকেটের সদস্যরা সব সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। একীভূত থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং পরে গঠিত স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে নিয়োগ, বদলি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশনের টাকা তোলার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন আব্দুল মালেক ড্রাইভার ওরফে বাদল হাজী। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কয়েকজন নেতারও তার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
নানা অনিয়মের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের নেতা মশিয়ার রহমান বকুলকে ২০শে ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে রাজশাহীতে বদলি করার তিন মাসেও যোগদান করেননি প্রভাব ও প্রতিপত্তির দাপটে। স্বাস্থ্য বিভাগের এমন অনেক নজির আছে যা চোখের আড়ালেই থেকে গেছে।
করোনা মহামারীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা প্রতারণা, ঘুষ গ্রহণ, অনিয়ম, গণমাধ্যমে সমালোচনা এবং নানা অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য বিভাগের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকেই বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মীদের সংখ্যাও কম নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘটনার তদন্ত না করে শুধু বদলি বা অন্যজনকে পদায়ন লোকদেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়। দুদক বেশ কয়েকবার এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় রদবদলের তথ্য চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের (দুদক) অনুসন্ধানে উঠে আসা প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মোতাবেক, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বেশির ভাগ রদবদল ঘটেছে প্রশাসনিক কারণে ও নীতিমালা মেনে। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে রদবদলের সংখ্যাটাও কম নয়। অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, করোনা কালে অভিযোগে রদবদল বিষয়টি তুলনামূলক বেশি পরিলক্ষিত হয়। দেখা গেছে, কোনো একটি বড় ধরনের জনস্বার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের বিপরীতে শুধু বদলির মধ্যেও সীমাবদ্ধ থেকেছে। আবার এদের মধ্যে যারা বেশি প্রভাবশালী তাদের প্রতিপত্তির প্রভাবে শাস্তিতো দূরের কথা বদলিও করা যায়নি। যে বিষয়গুলো খুববেশি সমালোচিত হয়েছে কেবল সেগুলোতেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়: মালেক ড্রাইভার, ডা. সাবরিনা বা শাহেদ করিমের জালিয়াতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বদলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অব্যবস্থপানা, দুর্নীতি-দুর্যোগ বেড়ে যাওয়ার সাথে আশঙ্কামূলক অদূর ভবিষ্যত নির্দেশ করছে। যা বাংলাদেশ সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় যে খারাপ চিত্র ধারণ করেছে এবং করছে তা সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাবণার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই রদবদলকে আলোচনায় আনতে হবে। রদবদলের সুস্পষ্ট কারণ চিহ্নিত করতে হবে এবং শাস্তির আওতায় আনা যায় এমন কারণকে ছাড় দেওয়া যাবে না। সুষ্ঠু নীতিমালা ও শাস্তির বিধান করতে হবে এবং যে কোনো অপরাধ ও যে কারোর বিপক্ষে যাতে আইনানুসারে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে জন্য পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেই ঢেলে সাজাতে হবে।
লেখক:
জনস্বাস্থ্য গবেষক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এমিনেন্স এসোসিয়েটস্ ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট।
নিবন্ধ তৈরিতে গবেষণা সহায়তা দিয়েছেন মো. জহুরুল ইসলাম, কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্ট অফিসার, এমিনেন্স এসোসিয়েটস্ ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ।