মুন্সীগঞ্জের কাজলি নদী দূষণ ও ভরাট করে যাচ্ছে আনোয়ার সিমেন্ট কোম্পানি

নিউ হক শিল্প-কারখানা ও নয়াকান্দি গ্রাম থেকে কুমারিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার নদী ভরাট ও দখল করেছে আনোয়ার সিমেন্ট কোম্পানি। বাউশিয়া ইউনিয়নের পোড়াচক বাউশিয়া পূর্ব নয়াকান্দি জেলেপাড়া নয়াকান্দি ও পশ্চিম কান্দি গ্রামের মানুষরা জানান, আনোয়ার সিমেন্ট শিট কারখানার ফেলা বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে কাজলি নদীর পানি। নদী ভরাট করে দখল করে যাচ্ছে  এই প্রতিষ্ঠানটি। 

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ ||

মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় শিল্প-কারখানার বর্জ্যে দূষণ বাড়ছে মেঘনা নদীর শাখা কাজলি নদীতে। এই দূষণ আর নদী ভরাটের অভিযোগ উঠেছে আনোয়ার সিমেন্ট শিট শিল্প কারখানার বিরুদ্ধে।
গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন কাজল নদীর পারে অবস্থিত আনোয়ার সিমেন্ট শীট শিল্প কারখানা ।

রোববার ১৪ই ফেব্রুয়ারি দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, নিউ হক শিল্প-কারখানা ও নয়াকান্দি গ্রাম থেকে কুমারিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার নদী ভরাট ও দখল করেছে আনোয়ার সিমেন্ট কোম্পানি। বাউশিয়া ইউনিয়নের পোড়াচক বাউশিয়া পূর্ব নয়াকান্দি জেলেপাড়া নয়াকান্দি ও পশ্চিম কান্দি গ্রামের মানুষরা জানান, আনোয়ার সিমেন্ট শিট কারখানার ফেলা বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে কাজলি নদীর পানি। নদী ভরাট করে দখল করে যাচ্ছে  এই প্রতিষ্ঠানটি।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

পূর্ব নয়াকান্দি জেলে পাড়া গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার এই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। একাধিক কোম্পানির দূষিত বর্জ্যে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে নদীর পানি। অনেক স্থানে নদী ভরাট ও দখল করেছে এই কোম্পানি। কারখানার দূষিত তরল বর্জ্যে ক্ষতিতে পড়েছে নদীর সকল প্রজাতির মাছ। বাউশিয়া ইউনিয়নের আট থেকে দশটি গ্রামের পাঁচশ’র বেশী জেলে পরিবার পেশা পাল্টে জীবিকা নির্বাহ করছেন। দূষিত বর্জ্যের কারণে নদীর পানি সকল কাজে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শরীরের কোথাও ওই নদীর পানি লাগলে এলার্জিসহ নানাবিধ রোগে ও সমস্যায় পড়ছে এলাকাবাসীর নারী-পুরুষ শিশুসহ সবাই। দূষিত বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধের ব্যবস্থাসহ নদী খননের মাধ্যমে নদীর গতিধারা উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন গ্রামের নারী-পুরুষসহ সবাই।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

আনোয়ার সিমেন্ট শিট কোম্পানির প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহেল তাদের এমনসব কাজের বিষয়ে জানান, মতামত দেয়ার এখতিয়ার আমাদের উপর মহলের। আপনারা কোম্পানির মালিকদের সাথে যোগাযোগ করেন বলে সাংবাদিকদের সাফ জানিয়ে দেন এই কর্মকর্তা।

উপজেলার বাউশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান প্রধান জানান, বাউশিয়ার কাজলি নদী যা ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষ প্রাকৃতিক সুবিধা ভোগ করেন। পরিবেশ কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের সহযোগিতায় পানি দূষণমুক্ত ও বর্জ্য নিক্ষেপ বন্ধ করতে গণমানুষের কল্যাণে সর্বাধিক সহযোগিতা ও প্রচেষ্টা থাকবে। তিনি আরোও জানান, জাইকা প্রকল্পের মাধ্যমে এই নদী খনন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

উপজেলা নির্বাহি অফিসার জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কোন শিল্প কারখানা নদীর দূষণ ও নদীতে বর্জ্য ফেলে ভরাট করছে, প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। তিনি আরো জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগ এর মাধ্যমে আইনগত সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ সারাদিন