|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গাজীপুর ||
খানাখন্দে জর্জরিত জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নরুন বাজার এলাকায় জয়দেবপুর- আজমতপুর- ইটাখোলা আঞ্চলিক মহাসড়ক। এসব খানাখন্দে প্রায়শই আটকে যায় মালবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন। এমনি এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় মঙ্গলবার । বড় এক গর্তে আটকে যায় বেশ কয়েকটি ভারী যান। অন্য গাড়ীতে শেকল লাগিয়ে যানগুলোকে টেনে তুলতেই কয়েক ঘন্টা লেগে যায়। এতে আটকে থাকতে হয় সড়কে থাকা শত যানবাহনকে। তবে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও পুলিশ মিলে রেশনিং পদ্ধতিতে আটকে থাকা গাড়ীগুলোকে যেতে সহায়তা করে।
আটকে থাকা গাড়ীর চালক, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, জয়দেবপুর-আজমতপুর- ইটাখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের ২৪ কিলোমিটার গাজীপুরের চরসিন্দুর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে রয়েছে একশ’র বেশী গর্ত। ইট বিছিয়ে এসব গর্ত ভরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে সড়ক বিভাগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ গেলো এক বছরও হয়নি বড় ধরনের সংস্কার করা হয়েছে এই সড়কের। বেহাল সড়কের গর্ত আর কাদার কারণে গাড়ী চলাচলে সমস্যাতো হচ্ছেই, নরুন বাজারে এখন আর এলাকাবাসী তাদের উৎপাদিত মালামাল নিয়েও বসতে পারছেনা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার ১০ই আগস্ট সকাল ১১টায় কথা হয় আটকে থাকা যানবাহনের চালকদের সাথে। রাজশাহী থেকে আসা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের একটি কাভার্ডভ্যানের গন্তব্য সিলেট। চালক মো. কোরবান আলী জানান, গর্তে আটকে থাকা ট্রাকের জন্য রাত ৩টা থেকে আট ঘন্টা এখানে গাড়ীতেই বসে আছি। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার শফিপুর এলাকার এম এস এ স্পিনিং মিলের একটি কাভার্ডভ্যান যাবে হবিগঞ্জে। চালক মো. সুমন মিয়া বলেন, রাত সাড়ে ১২টায় এখানে এসেছি। প্রায় ১০ ঘন্টা ধরে বসে আছি, নির্দিষ্ট সময়ে হবিগঞ্জে যেতে পারবো না। গাজীপুর নগরীর বাসিন্দা মো. বিল্লাল হোসেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রাইভেট কারে যাবেন নরসিংদী। তিনি গাড়ী থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। এ প্রতিবেদককে দেখে উচ্চস্বরে ডেকে কথা বলতে শুরু করেন। বলেন, সাংবাদিকরা এসব লেখে না।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল জানান, এক বছর আগে রাস্তাটি মেরামত করেছে, এখনই নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত ফল ও কাঁচা তরকারি নরুন বাজারে রাস্তায় বসে বিক্রি করে। বাজারের পুরো এলাকাটিই এখন কর্দমাক্ত এবং গাড়ীর যানজট, তাই মালামাল নিয়ে বসতেও অসুবিধা।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান জানান, নরুন এলাকায় পুলিশ পাঠিয়েছি। এক পাশ পরিষ্কার করে দিয়েছি, এখন গাড়ী চলাচল স্বাভাবিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক বছর আগে রাস্তাটি সংস্কার করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রিমি নির্মাণ সংস্থা। গাজীপুর সড়ক বিভাগের নির্দেশে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তে ইট বিছিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী সুমন মিয়া জানান, আমরা উপরিভাগে সংস্কার (কার্পেটিং) করেছি। সড়কের সাব-বেইস দুর্বল থাকায় ফুলে উঠছে এবং গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এবিষয়ে সড়ক বিভাগের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত সড়কে আটকে থাকা গাড়ীর দীর্ঘ লাইন রয়েছে। এ বিষয়ে গাজীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সাইফউদ্দিন মুঠোফোনে জানান, আগামী কালের(বুধবার) মধ্যে এই জায়গাটা মেরামত করে দেবো।