ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে বাঁচতে চায় উলিপুরের মানুষ

ব্রহ্মপুত্র নদ মোল্লারহাটের পূর্ব দিকের অংশে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ভাঙছে। বর্তমানে মোল্লারহাটটিও ভাঙনের মুখে।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম ||

ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে গত দুই মাসে পঞ্চাশটির বেশী বসতবাড়ি ভেঙে গেছে। নদীতে চলে গেছে গাছপালা। হুমকিতে পড়েছে আবাদি জমিসহ মোল্লারহাট বাজার। ভাঙনে দিশেহারা মানুষ। সংশ্লিষ্ট অফিস আদালত ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরণা দিয়েও মিলছে না প্রতিকার। বৃহস্পতিবার ১১ই মার্চ কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ভাঙনগ্রস্ত স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদ মোল্লারহাটের পূর্ব দিকের অংশে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ভাঙছে। বর্তমানে মোল্লারহাটটিও ভাঙনের মুখে।  

ওই এলাকার উত্তর বালাডোবা গ্রামের ইব্রাহিমের স্ত্রী ছালেহা জানান, স্বামী খড়ি বেচি খায়। ৩ ছেলে, ২ মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বাড়িভিটা ভেঙে যাওয়ায় জায়গা না পেয়ে নদীর তীরে ছাপড়া  তুলে ৬মাস ধরে থাকছেন তারা। এখন পর্যন্ত কেউ আসেনি সহায়তা করতে। একই দুরাবস্থা এলাকার সোনাভান, ছালেহা, ছামাদ ও জহুর আলীর। ঘরবাড়ী সরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এখনো থাকার জায়গা পাননি।

বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মহু বাদশা জানান, গত পাঁচ বছরে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে তার ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মানুষ এখন ৪ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। চলতি বছর নদী ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে দুটি ওয়ার্ডের ৭শ’র বেশী বতসবাড়ী।

গেলো জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতেই নদীতে চলে গেছে ৬০টির মত বাড়ি। ভাঙনের মুখে রয়েছে বসতবাড়ি, গাছপালাসহ আবাদি জমি। আরেক ওয়ার্ড মেম্বার জামাল মণ্ডল জানান, এই অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট রয়েছে ভাঙনের মুখে। চঞ্চলের মানুষের কেনাবেচার জন্য প্রয়োজনীয় এই হাটটি রক্ষায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করেও প্রতিকার মিলছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৫শতাধিক জিও ব্যাগ দেয়া হলেও তা কাজে আসছে না। জিও ব্যাগ নয় স্থায়ী ভাঙন রোধে সিসি ব্লক ফেলার দাবী এলাকাবাসীর।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে জানান, শুকনো সময়েও মোল্লারহাটে নদী ভাঙন রয়েছে। এরই মধ্যে আমরা ভাঙন রোধে কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং-এর প্রস্তুতি নিয়েছি। স্থায়ীভাবে এটা রোধ করার জন্য বাজেট চেয়ে আবেদন করেছি। খুব তাড়াতাড়ি অনুমোদন পেলে আমরা স্থায়ীভাবে কাজ শুরু করতে পারবো এবং ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।

সংবাদ সারাদিন