তিস্তার ভাঙ্গনে বাড়ছে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে দারিদ্র

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভাঙন। নির্ঘুম রাত কাটিয়েও নিজেদের বসতভিটা রক্ষা করতে পারছেন না তিস্তাপাড়ের মানুষ। প্রতিদিনই বাস্তুচ্যুত হচ্ছে একাধিক পরিবার।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম ||

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভাঙন। নির্ঘুম রাত কাটিয়েও নিজেদের বসতভিটা রক্ষা করতে পারছেন না তিস্তাপাড়ের মানুষ। প্রতিদিনই বাস্তুচ্যুত হচ্ছে একাধিক পরিবার।

রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তাপাড়ের ৫০ থেকে ৬০ টি পরিবারের ৫শ থেকে ৬শ মানুষ এই মুহুর্তে নদী ভাঙ্গনের মুখে। শুধু কি ভাঙন একইসঙ্গে দারিদ্র, অনিশ্চয়তা, অনাহার আর অর্ধাহারে আছেন শিশু ,বৃদ্ধসহ নানানও বয়সী মানুষ।

ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাব খাঁ, বড়দরগা, বুড়িড়হাট সহ আরও কযেকটি গ্রামের বসত বাড়ি,বাগান,পুকুর সহ আবাদি জমি নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভাঙ্গন কবলিত পরিবারগুলোর আহাজারিতে নদীপাড়ের আকাশ,বাতাস ভারী হয়ে আছে। নিজের বসতভিটার শেষ সম্বলটুকু রক্ষায় পরিবারের সবাই ব্যস্ত। কারো সাথে কথা বলার সময়টুকু যেন মূল্যহীন। 

অনেক বুঝানোর পরে কথা হয় বড়দরগা ও বুড়িরহাট এলাকার প্রবীন আব্দুস ছাত্তার (৭০) এর সাথে। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, তিস্তা আমাদের সব শেষ করে দিল বাহে, আজ দেখাছাড়া হামার করার কিছুই নাই। ছেলে বয়স থেকে কয়েকবার বাড়ি ঘর নিয়ে ১৯৭৪ সালে এই জায়গায় বাড়ি করছি এতদিন পরে এই বাড়ি আবার ভাঙ্গতেছে, হামরা এখন কোথায় যাই। আরো কথা হয় হায়দার আলী (৪৫), আশরাফুল (৩৪), আছির উদ্দিন (৫৫), আবুল হোসেন (৬০), রফিকুল (৩০), ছামাদ (৭০) এর সঙ্গে। তারা বলেন চোখের সামনে হামার শেষ সম্বলটুকু নদীতে গেল, হামার কষ্ট দেখার কেউ নাই, হামার করারও কিছু নাই। এখন কারো কাছে একটু জায়গা নিয়া থাকা লাগবে। 

এছাড়াও এলাকায় ২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মসজিদ, বুড়িরহাট বাজারসহ কয়েকটি গুরুত্বপুর্ন স্থাপনা ভাঙ্গনের মুখে। বরাবরের মতো এবারও স্থানীয়দের অভিযোগ সেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি। তারা দায়সারা দায়িত্ব পালনে প্রতিবছর এই এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়। 

এরইমধ্যে ২৮শে জুন সোমবার  কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মাহমুদ হাসান ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় পরিদর্শনে এসে এই প্রতিবেদককে জানান, তিস্তা নদীর  গোকুন্ডা এলাকা থেকে খিতাব খাঁ, বড়দরগা, বুড়িরহাট হয়ে থেতরাই পর্যন্ত ভাঙ্গনপ্রবণ এলাকার ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে, আজ(মঙ্গলবার) থেকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে।

সংবাদ সারাদিন